সাবেক কেন্দ্রীয় নেতাকে পেটালেন ঢাবি ছাত্রলীগ

সভাপতি লিফটে ওঠা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভপতি রুহুল আমিনকে মারধর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা। এ‌ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপ‌তি সন‌জিত চন্দ্র দাস নি‌জেও মারধ‌রে অংশ নি‌য়ে‌ছেন ব‌লে অভি‌যোগ ভুক্ত‌ভোগীর।

এ‌ ঘটনায় রুহুল আমিনসহ তিনজন গুরুতর আহত হ‌য়ে‌ছেন। তা‌দের‌কে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি করা হ‌য়ে‌ছে। এদি‌কে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দা‌বি ক‌রে অনশ‌নের ঘোষণা দি‌য়ে‌ছেন ভুক্ত‌ভোগী রুহুল। বিচার না পে‌লে আত্মহত্যা কর‌বেন ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন তি‌নি।

বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) নতুন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হলের মুজাহিদ ও সোলাইমান, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ইমন, বঙ্গবন্ধু হলের শান্তসহ ২০-২৫ জন নেতকর্মী হামলায় অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন রুহুল আমিন। মারধরকারীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুহুল আমিনের বড় ভাই ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিমের শাশুড়ি মারা গেলে মরদেহ নিতে রুহুল আমিন, আব্দুর রহিম এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা ও রুহুল আমিনের ভাবি ঢাকা মেডিকেল কলেজে আসেন।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের বড় ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে সঞ্জিতের কয়েকজন অনুসারীও লিফটে ঢোকেন। রুহুল সঞ্জিতের অনুসারীদের কয়েকজনকে লিফট থেকে নেমে তাদেরও লিফটে উঠতে সুযোগ দেয়ার অনুরোধ জানান। এসময় সঞ্জিতের ভাইয়ের সঙ্গে রুহুলের কথা কাটাকাটি হয়।

এর ৪০ মিনিট পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজের নতুন ভবনের আটতলায় উঠে রুহুল আমিনকে বেধড়ক মারধর করেন। মারতে মারতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রুহুলকে আটতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসেন। এ সময় হাসপাতালে আসা রোগী ও দর্শনার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

এদিকে ওই এলাকায় থাকা ঢাকা আলিয়া ও ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ কর্মীকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন আলিয়া মাদ্রাসার ডিগ্রি ২য় বর্ষের কাজী শাওন ও ঢাকা কলেজের ২০১২-১৩ সেশনের ম্যানেজমেন্টের ছাত্র মমিনুর রহমান রকি।

কাজী শাওন ব‌লেন, ১২টার প‌র খে‌তে বের হ‌য়ে‌ছিলাম মেডি‌কে‌লের সাম‌নে। এ সময় ১৫-২০ জন ছে‌লে জি‌জ্ঞেস ক‌রে কোথা থে‌কে আস‌ছি। ঢাকা আ‌লিয়া বলার সা‌থে সা‌থেই উপর্যুপ‌রি মারধর করে। তারা আমার মোবাইল ও মা‌নিব্যাগ নি‌য়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে রুহুল আ‌মিন ব‌লেন, বড় ভাই‌য়ের সাম‌নে ছোট ভাই‌কে মারধর ক‌তটা হৃদয়বিদারক। তারা দুই ঘণ্টা যাবৎ আমার খালার লাশ আট‌কে রে‌খে‌ছে। এটা মে‌নে নেয়া যায় না।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, এটা অত্যন্ত দুখঃজনক। একজন সিনিয়র নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও একটা হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিনি। তার ওপর এরকম হামলা অবশ্যই নিন্দনীয় ও ন্যাক্কারজনক। আমরা ওনাকে বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। আমরা তদন্ত করে এটার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবো।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)