স্বামীর দাফন শেষ করে দেরিতে পরীক্ষা দিতে আসায় বসতে দেয়া হলো না স্ত্রীকে
নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বামীর দাফন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ের পরে উপস্থিত হলে তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি স্ত্রী তিথি খাতুনকে । রবিবার সকালে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে। যদিও কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের দাবি শিক্ষা বোর্ড নিয়ন্ত্রকের অনুমতি না মেলায় হতভাগা পরীক্ষার্থীর জন্য তারা কিছু করতে পারেনি সে । শ্যামনগরে জোবেদা সোহরাব মডেল একাডেমী থেকে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে তিথি খাতুন। শ্যামনগর পৌরসভার মাজাট গ্রামের আরশাদ আালী বাবুর মেয়ে তিথি বাড়ির পাশ্ববর্তী জোবেদা সোহরাব একাডেমীতে লেখাপড়া করতেন।
তিথি খাতুন জানান, প্রায় আট মাস আগে খানবাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজের সম্মান শ্রেণির ছাত্র দেবহাটা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের সাথে তার বিয়ে হয়। আগের পরীক্ষাগুলো ভাল হয়েছে-উল্লেখ করে সে জানায় শনিবার রাতে এক বন্ধুকে রক্ত দিতে বের হয়ে কুলিয়া এলাকা পৌছে ট্রাকের সাথে দুর্ঘটনায় তার স্বামী বিল্লাল হোসেনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রাতে শশুর বাড়িতে যাওয়ার পর সকাল দশটায় জানাযার সিদ্ধান্ত হয়। এক পর্যায়ে জানাযা শেষে মাটি দিয়ে শশুবাড়ি থেকে দ্রুতবেগে একটি বাইকযোগে শ্যামনগরের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছালেও তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। এসময় স্বামীর মৃত্যু ও দাফনের প্রমানসহ জানানোর পরও তার কোন কথা না শুনে বরং পরীক্ষা কক্ষে ঢুকতে বাঁধা দে্ওয়া হয় তাকে ।
তিথির প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, মেয়েটি মেধাবী বলে আমি নিজেও অনুরোধ করেছিলাম, তাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসিয়ে প্রশ্নপ্রত্র দিয়ে সময় কমিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া ।এতে সদ্য স্বামী হারানো এ কিশোরীর জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়লো।
নকিপুর পাইলঠ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুষ্ণেন্দু মুখাজী বলেন, মেয়েটির এমন দুর্ঘটনার কথা জেনে সরাসরি কন্ট্রোলর স্যারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আগেই অবজেকটিভ পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তাকে নতুন করে সেগুলো সরবরাহ সম্ভবত ছিল না। এছাড়া মাত্র এক ঘন্টার একটু বেশি কিছু সময় বাকি থাকতে তিথি কেন্দ্রে পৌছানোর কারণে তার পক্ষে ওই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব ছিল না।
20
