স্ত্রীকে ভারতে পাচার, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের শচীন্দ্রনাথ মন্ডলের ১৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড

নিজস্ব প্রতিনিধি:

স্ত্রীকে ভারতে পীরের মাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পাচারের পরে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে এক ব্যক্তির ১৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো পাঁচ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এক জনাকীর্ণ আদালতে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম এ আদেশ দেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীর নাম শচীন্দ্রনাথ মন্ডল ওরফে ইব্রাহীম খলিল (৫২)। সে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার চুনাখালি গ্রামের কিশোরী মোহন মন্ডলের ছেলে।

মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৯ সালের মার্চ মাসে শ্যামনগরের চুনাখালি গ্রামের শচীন্দ্রনাথ মন্ডল ধর্মান্তরিত হয়ে কালিগঞ্জ উপজেলার খড়িতলা গ্রামের আরশাদ আলী শেখের মেয়ে আফরোজা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর শচীন্দ্রনাথ মন্ডলের নাম হয় ইব্রাহীম খলিল। ভারতে পীরের মাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্থানীয় সুশান্ত মন্ডল বাচ্চু, সুশীত ওরফে বড়চুন্নু, সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ ও নিমাই বাগদীর সহযোগিতায় ওই বছরের ৩০ মে রাত সাড়ে সাতটার দিকে ইছামতী নদী পার করে আফরোজাকে ভারতে নিয়ে যায়। পরে তাকে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে চলে যায় সে। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে দেশে ফিরে ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শচীন্দ্রনাথ মন্ডলসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আফরোজা কালিগঞ্জ থানায় একটি মানবপাচারের মামলা (জিআর-১৭১-০৯ কালিঃ)দায়ের করেন। পুলিশ সকল আসামীকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক লস্কর জায়াদুল হক এজাহারভুক্ত ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকা নিমাই বাগদীকে পুলিশ ২০২২ সালের ডিসম্বের মাসে গ্রেপ্তার করে।

মামলার ১০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে পলাতক আসামী শচীন্দ্রনাথ মন্ডল ওরফে ইব্রাহীম খলিলের বিরুদ্ধে আফরোজাকে ভারতে পাচারের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মানবপাচার আইনের ৫(১) ধারায় ১৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় কাঠগোড়ায় থাকা নিমাই বাগদীসহ অপর পলাতক চার আসামীকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

পলাতক আসামীদের পক্ষে সহায়তা করেন(স্টেট ডিফেন্স) লিগ্যাল এইডের আইনজীবী অ্যাড. বসির আহম্মেদ। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি অ্যাড. এসএম জহুরুল হায়দার বাবু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)