নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই জলাধার ভরাট করছে বিএডিসি

অনলাইন ডেস্ক:

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই রাজধানীর জলাধার ভরাট করছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। গাবতলীতে বিএডিসির প্রায় ১১৭ একর জমি থাকলেও ড্যাপের নকশায় তা মুক্ত জলাশয় হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ সেই জমির একটি অংশ ভরাট করে ভারী স্থাপনা নির্মাণ করছে সংস্থাটি।

কয়েক দশক ধরে রাজধানীর গাবতলী বেড়িবাঁধসংলগ্ন জলাধার সংরক্ষিত রয়েছে। মালিকানা বিএডিসির হলেও সবশেষ ড্যাপের নকশায় তা উন্মুক্ত জলাধার হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে এখানে মুক্ত জলাশয় থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে হয় ধানের চাষ। ঢাকার বুকে এ জায়গাটুকু তাদের স্বস্তির নিশ্বাস।

পরিবেশবিদ ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ড্যাপে যদি কোনো এলাকাকে জলাধার হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তাহলে এটির শ্রেণি পরিবর্তন করার আর কোনো সুযোগ থাকে না।

স্থানীয় একজন বলেন, এই জায়গাটা আগে নদী ছিল, এখানে মাছ চাষ করা হতো। এখন এটা বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে।

তবে সেখানে হঠাৎই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বিএডিসি। এক্ষেত্রে প্রশ্নতো উঠতেই পারে সরকারি প্রতিষ্ঠান তার নিজের জমিতে ভবন তুলবে তাতে দোষের কী।

কিন্তু প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুসারে, প্রাকৃতিক জলাধার হলে সেই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারে না খোদ কর্তৃপক্ষও। সে ক্ষেত্রে এই জলাধারে বর্ষায় মাছ কিংবা পরে ধানের চাষ করা গেলেও ভবন তো দূরের কথা ভরাট করারও সুযোগ নেই।

এরই মধ্যে এ এলাকায় হাতিরঝিলের আদলে নান্দনিক প্রকল্প নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ও ব্যবস্থপনার মাধ্যমে গঠন করা করা হয়েছে কল্যাণপুর রেগুলেটিং পণ্ড। এখানে ভারী স্থাপনা নির্মাণ হলে বাধা পড়বে সেই প্রকল্পে যা নগরের জন্য হতে পারে নতুন হুমকি। তাই অবিলম্বে বন্ধের দাবি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, এই পণ্ড রক্ষা করে ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতাসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ জনবান্ধব কাজ এখানে করা সম্ভব হবে। এমন পদক্ষেপের কড়া সমালচনা করছেন নগরবিদরাও।

নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, ‘আমি মনে করি এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত আছেন বা যারা তৎপর আছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মধ্য দিয়ে আর কেউ যেন উদ্যোগ না নেয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

তবে এসব যেন কিছুই কানে তুলছে না বিএডিসি। তিন দিন ধরে যোগাযোগের পর দেখা মিললেও প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জানান এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।

বিএডিসি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সাজ্জাদ বলেন, গাবতলীর বিষয়টা আমার এই মুহূর্তে জানা নেই। আমাদের তো সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজেক্ট আছে।

বালু বরাট করে এরই মধ্যে ভারী স্থপনা নির্মাণের কাজও শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)