আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ, নিহত ১৭৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিতর্কিত ‘নাগোরনো-কারাবাখ’ ভূখণ্ড ঘিরে ফের যুদ্ধে জড়িয়েছে প্রতিবেশী দুই দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। এরইমধ্যে এ লড়াইয়ে উভয় পক্ষের অন্তত ১৭৬ জন সেনা নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শুধু আর্মেনিয়ারই রয়েছে ১০৫ জন। এছাড়া বিপুল সৈন্য বন্দি আজেরি সামরিক বহরের হাতে।

এমন পরিস্থিতিতে উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে আর্মেনিয়া। যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি আজারবাইজান।

মুসলিম রাষ্ট্র আজারবাইজানের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, সংযত না হলে চরম মূল্য দিতে হবে প্রতিবেশিকে। অন্যদিকে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় রুশ নেতৃত্বাধীন যৌথ প্রতিরক্ষা জোটের সহায়তা চেয়েছে আর্মেনিয়া।

আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনার ইভাজভ বলেছেন, দাশকাশান-কালবাজার ও লাশিন সেনাচৌকিগুলো ঘিরে রেখেছে চিরবৈরী প্রতিবেশি। রাতভর ছুঁড়েছে মিসাইল-গোলাবারুদ। হুঁশিয়ারি করছি- সংযত হন, নতুবা চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে। বিপুল সেনা হারিয়েছে তারা, বহু সৈনিক বন্দি। আর, অতীতের পরাজয় থেকেও তাদের শিক্ষা নেয়া উচিৎ। কারণ, একখণ্ড জমির ব্যাপারেও ছাড় দিবে না আজারবাইজান।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, দু’দিনের সীমান্ত সংঘাতে আমরা ১০৫ বীর সেনাকে হারিয়েছি। লড়াই দীর্ঘায়িত হলে, সংখ্যাটিও বাড়বে। সংবিধানের চতুর্থ অনুচ্ছেদ অনুসারে, যৌথ নিরাপত্তা জোট সিএসটিওর কাছে চেয়েছি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। কারণ, জোটের একজন সদস্যের ওপর আক্রমণ আসার অর্থ বাকিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক ঐক্য রক্ষায় প্রয়োজন মিত্র রাশিয়ার সামরিক সহায়তা।

এদিকে, মুসলিম রাষ্ট্র আজারবাইজানের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে লিপ্ত রাশিয়া সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে মিত্র আর্মেনিয়াকে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, চলমান সীমান্ত সংঘাতে মুসলিম আজেরি ভাইদের জয় নিশ্চিত। কারণ, আর্মেনিয়া অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে জড়িয়েছে নতুন সহিংসতায়। প্রত্যাশা, খুব শিগগিরই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ঘাঁটিতে ফিরবে আর্মেনীয় সেনারা। বলবো, আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়ায় দেখান এ তৎপরতা।

রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, সময়ের সাথে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্ত পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। নিকোল প্রশাসন রুশ পরিচালিত সিএসটিও জোটের সামরিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। সেই বহর প্রস্তত। কিন্তু, যাচাইবাছাই এবং বিবাদমান পক্ষগুলোর কথা পর্যালোচনার পরই তাদের পাঠানো হবে।

তবে নিজ দেশে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখোমুখি নিকোল পাশিনিয়ান সরকার। রাতভর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ছিল ক্ষুব্ধ আর্মেনীয়দের অবস্থান। কারণ, গেলো তিন দশকে আজারবাইজানের সাথে দেশটির যত যুদ্ধ-সংঘাত হয়েছে তাতে আর্মেনিয়াই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

সূত্র: আল-জাজিরা

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)