তালায় গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক

ফারুক সাগর: তালা উপজেলায় গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক। বিস্তীর্ণ মাঠে সোনালী পাকা ধানের মিষ্টি সুগন্ধে উপজেলার বিভিন্ন বিল সুরভিত করে তুলেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে,উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের কাসিদা,বালিয়াদহ,বেনেরাবাধ বিল,খলিশখালী ইউনিয়নের চোমরখালী,কৈখালি,গাছার বিল,খলিলনগর ইউনিয়নের চাঁপানঘাঠ,পশ্চিম মাঠ,জালালপুর ইউনিয়নের জেঠুয়া,কৃষকাটি,আটঘোরা বিল সহ অন্যান্য বিলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রেকর্ড পরিমাণে উৎপাদন হয়েছে। সেই সাথে একটানা বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষক সহজে ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে। উপজেলার এ সকল বিলের প্রায় অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে। কোথায় কোথায় ধান প্রক্রিয়াজাতের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এমন কি রাতেও চলছে কার্যক্রম।দিনের তাপমাত্রা বেশি থাকায় সাধারণত ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৩ টার পর থেকে ৬ টা পর্যন্ত মাঠে ধান কাটা এবং তোলার কাজে ব্যস্ত কৃষক। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে রাতেও চলছে কার্যক্রম বলছিলেন, স্থানীয় কৃষক সাইফুল মোল্লা,ইবাদুল সরদার,মুনছুর সরদার।তবে কৃষকের ধান ঘরে আনতে বিঘা প্রতি ৯-১০টি শ্রমিক লাগে। এক একটি শ্রমিক ৫০০-৬০০ টাকা করে। ফলে শুধু কৃষকের ধান ঘরে আনতে খরচ হয় ৫-৬ হাজার টাকা। অন্যদিকে ধান রোপণ,কীটনাশক ও সেচ ব্যয় যোগ করলে প্রতি বিঘায় খরচ হয় ১০- ১২ হাজার টাকার মত বলছিলেন,বাগমারা গ্রামের খাইরুল আলম মিঠু। অন্যদিকে প্রতি বস্তা(৬০কেজি) উচ্চ ফলনশীল ব্রাকের-৭৭৭ ও সুভলতা(ভারত) জাতের ধান-১৭০০-১৮০০ টাকা, ব্রি-২৮ ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান রড়মিনিকেট-১৯০০-১৯৫০,হীরা-২ ও দেশীয় জাতের আইটি ধান-১৫০০-১৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধানের দাম গত বছর চেয়ে বেশি হওয়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন বলছিলেন,স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী কদ্দূর শেখ। আবার এক বিঘা জমিতে (৩৩ শতাংশ) জমিতে ৪-৫ হাজার ধানের বিছলি হয়। প্রতি হাজার বিছলি ২৩-২৪শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই সাথে স্থানীয় গো খাদ্যের চাহিদা পূরণ হচ্ছে।তবে কিছু উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানে কারেন্ট পোকা ও মাজরা পোকায় আক্রান্ত হয়েছে বলছিলেন,বালিয়াদহ গ্রামের সাহানাজ বিশ্বাস।ছয় বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান লাগান। কিন্তু শীর্ষ ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়ে তার অর্ধেক জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। আগামীতে তিনি এ জাতের ধান লাগানোতে বিরত থাকবেন বলছিলেন,রঘুনাথপুরের গ্রামের লুৎফার মোড়ল।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তালা উপজেলায় ১৯ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন এবং দাম বেশি পাওয়া আগামীতে ধান চাষে কৃষক আগ্রহী হবে বলে জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)