শ্যামনগরে  অপচিকিৎসার আরেক নাম  এম আর এ ক্লিনিক 

আরাফাত আলী :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অধিকাংশ প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে  চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা।  সেবার বদলে যেভাবে হোক রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা ক্লিনিক মালিকদের মুল নেশা।
শ্যামনগর উপজেলায় সরকারি অনুমোদনহীন ও ডাক্তার -নার্স বিহীন নির্বিঘ্নে চলছে ১৪ টি ক্লিনিক।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেহাল অবস্থা  পশু হাসপাতালের  পাশে অবস্থিত এম.আর.এ ক্লিনিক।
অনুসন্ধানে জানাযায়, নিরাপদে সন্তান প্রসবের জন্য কেউ ওই  ক্লিনিকে ভর্তি হলেই তাকে করা হয়  সিজারিয়ান অপারেশন। স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের বদলে রোগী ও প্রসূতির জীবন নিয়ে ভয় ধরিয়ে অস্ত্রোপচারের আশ্রয় নেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা।  এম.আর.এ ক্লিনিকের জন্মলগ্ন থেকে ভুল অপারেশনের কারনে  প্রান হারিয়েছে ৪-৫ জন রোগী। ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার আনিছুর রহমান নিজেই করেন সব ধরনের অপারেশন।  অ্যানাস্থেসিয়া ডাক্তার ও অভিজ্ঞ নার্স ছাড়াই চলে অপারেশন থিয়েটার। এছাড়া  ওয়ার্ডবয় ওটির ভিতরে রোগীর  কাটা জায়গা সেলাই করে। মাঝেমধ্যেই রোগীর পেটের ভেতর গজ-ব্যান্ডেজ,  রেখে সেলাই করে দেয়ার মতো ঘটনা ও ঘটে এম. আর. এ ক্লিনিকে। ওটির ভিতরে নেই প্রয়োজনীয় কোন সরঞ্জাম। নোংরা সারঞ্জম দিয়ে  অপারেশনের ফলে শতাধিক রোগীর কাটা জায়গায়  সৃষ্টি হয় ইনফেকশনের।যার ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা।এসব দেখভালের যেন কেউ নেই।
এম. আর.এ ক্লিনিকের কার্যক্রমেও রয়েছে অস্বস্তিকর অবস্থা। সরকারের কর্তাব্যক্তিরা অবৈধ ক্লিনিকের   বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেই খালাস। ফলে নির্বিঘ্নে চলছে যত্রতত্রভাবে গড়ে ওঠা এসব ক্লিনিক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক সোলাইমান গাজী বলেন, কাজ করতে গেলেতো একটু ভুল হবে। অপারেশন করতে গেলে অনেক সময় রোগী মারা যেতে পারে। কারন সব পেশানের অবস্থা একরকম থাকেনা‌। এছাড়া  অপারেশনের পরে  ইনফেকশনের কারনের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
ডাক্তার আনিছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এম আর এ ক্লিনিকের মালিক তিনি নন। ওই ক্লিনিকে তিনি শুধু মাত্র অপারেশন করেন।  অপারেশন করতে যেয়ে তার হাতে  কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে জানান তিনি। এছাড়া  রোগীর কারনে ইনফেকশনের সৃষ্টি হয় বলে তিনি জানান।
শ্যামনগর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন,শ্যামনগর উপজেলায় মোট ৩৪ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করা নেই। এছাড়া ৪ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।ডাক্তার-নার্স ও  সরকারি নির্দেশনা না মেনে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)