উত্তর কোরিয়ায় করোনায় তিন দিনে আক্রান্ত ৮ লাখ ২০ হাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনার সংক্রমণের বিস্ফোরণ দেখছে উত্তর কোরিয়া। মাত্র ৩ দিনের মধ্যে দেশটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ লাখ ২০ হাজার ৬২০ জনে।

আক্রান্ত এই রোগীদের মধ্যে অন্তত ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৫০ জনকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।  এছাড়া গত তিন দিনে দেশটিতে কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে মোট ৪২ জনের।

রোববার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তাসংস্থা কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে এসব তথ্য।

১২ মে দেশে প্রথমবারের মতো করোনা প্রাদুর্ভাবের কথা নিশ্চিত করে উত্তর কোরিয়ার সরকারি প্রশাসন। কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

পাশপাশি, করোনার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউনও জারি করে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রশাসন।

তবে গত দুই বছরের মহামারিতে এ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার সরকার কোনো টিকাদান কর্মসূচি না নেওয়ায় উত্তর কোরিয়ার জনগণ করোনা টিকার কোনো ডোজ পায়নি। ফলে, সর্বাত্মক লকডাউন জারি করা হলেও তা সংক্রমণের গতি কমাতে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে না।

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন ইতোমধ্যে করোনার প্রাদুর্ভাবকে ‘বিশাল বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়ার দাপ্তরিক নাম) প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের দেশে এর আগে এত বড় বিপর্যয় আসেনি।’

উত্তর কোরিয়ার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর ও বিশ্বের নিকৃষ্টতম সেবা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশটিতে কোনো করোনা টিকা নেই, ব্যাপক করোনা টেস্টের ব্যবস্থা নেই এমনকি ভাইরাস সংক্রমণজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় যেসব ওষুধ প্রয়োজন, সেসবও নেই।

২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে নিজেদের সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল উত্তর কোরিয়া; এবং এতদিন পর্যন্ত দাবি করে আসছিল যে, দেশে করোনার কোনো প্রাদুর্ভাব নেই। এমনকি গত বছর দেশটিতে আসা কয়েকটি টিকার চালান ফিরিয়েও দিয়েছে কিম জং উন নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।

আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে টিকা সহায়তা দেওয়ার জন্য ২০২০ সালে কোভ্যাক্স প্রকল্প শুরু করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই প্রকল্পের আওতায় উত্তর কোরিয়ায় গত বছর একাধিকবার টিকার চালান পাঠানো হয়েছিল।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা ও টিকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিন কোরিয়ার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, শিগগিরই নতুন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিম জং উন। উত্তর কোরিয়ার জনগণের মনযোগ করোনা থাকে ফিরিয়ে আনতে তিনি এই উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)