খুলনার পাইকগাছায় নৈয়ের নদীর বদ্ধ জলমহল দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ

আব্দুর রশিদ বাচ্চুঃ
খুলনার পাইকগাছার চাঁদখালী ইউপি’র নৈয়ের নদী ( বদ্ধ) জলমহল দখল কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দু’জন গুরুতর আহত হয়েছে।
বুধবার (৫ মে) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে পুর্ব গজালিয়ার কালুয়ারাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার উপর জলমহলের সাবেক ইজারা গ্রহীতা গোলক মন্ডল-ইউপি সদস্য আক্কাছ ঢালী পক্ষ ও বর্তমান খাস আদায়কারী মাহাবুবুর রহমান বিশ্বাস পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর জখমী অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজু সরদারকে খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানাগেছে, পুর্ব গজালিয়ার চিত্তরঞ্জন মন্ডলের ছেলে গোলক মন্ডল বাংলা ১৪২৫-২৭ সাল পর্যন্ত ২৬ একর’র উর্ধে সায়রত জলমহাল ১৩৩/৯৪ (নৈয়ের নদী) ইজরা গ্রহন করেন। যার মেয়াদ ছিল গত ৩০ চৈত্র পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের বলেন, ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও সাব লীজ হোল্ডারদের পক্ষে স্থানীয় আফসার ঢালীর ছেলে মোস্তফা কামাল ডিয়ার, আবু মুছা ও ইউপি সদস্য আক্কাছ ঢালী দিংরা সরকারী রাজস্ব না দিয়ে জলমহলটি অবৈধ ভাবে দখলে রেখেছিল। এদিকে সরকারী জলমহাল নীতিমালা- ২০০৯ এর আলোকে সরকারী দখল ও রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লস্কর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মীর রেজওয়ান আলী এ জলমহালটি বাংলা ১৪২৮ সনের ১ বৈশাখ হতে ৩০ জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত গজালিয়ার শাহাবুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মাহাবুবুর রহমানকে খাস আদায়কারী নিয়োগ দিলে মঙ্গলবার তারা জলমহালটির দখল বুঝে নেয়। এ ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠে। শুরু হয় হুমকি-পাল্টা হুমকির ঘটনা। এ ঘটনায় খাস আদায়কারী মাহাবুবুর রহমান বিশ্বাস মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোলক মন্ডল, ইউপি সদস্য আক্কাছ ঢালী ও তার ভাইপো ডিয়ার -মুছা ঢালীর বিরুদ্ধে জিডি করেন,যার নং- ১৯১।
এদিকে দু’পক্ষের উত্তেজনার জেরে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খাস আদায়কারী পক্ষের রবিউল সরদারের ছেলে পথচারী রাজু সরদার স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যলয়ের সামনে দিয়ে যাবার সময় ডিয়ার-মুছা দিংরা তর্কে জড়িয়ে পড়ে এক পর্যায়ে তারা বেধড়ক পিটিয়ে রাজুর বাম হাত ভেঙ্গে জখম করে। খবর পেয়ে রাজুর পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে ডিয়ার-মছা দিংরা রাজুর পক্ষের লোকজনকে ধাওয়া করে। এ সময় সরদার বাড়ীর লোকজন সংবদ্ধ হয়ে রাসেল ঢালীকে ঘেরাও করে বেদম মারপিট করে। খবর পেয়ে পাইকগাছা থানার পুলিশের ইন্সপেক্টর ( অপারেশন) দেবাশীষ দাশ, এসআই সুজিত অধিকারী ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসেন । খাস আদায় কারী মাহাবুবুর রহমান পক্ষ সমস্ত ঘটনার জন্য ইউপি সদস্য আক্কাছ ঢালী ও তার পরিবারকে দায়ী করেছেন। যদিও ইউপি সদস্য আক্কাছ ঢালী তা অস্বীকার করেছেন।
এদিকে আহত রাজুর পরিবার জানান,উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে লস্কর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মীর রেজওয়ান আলী জানান, জলমহলের সাবেক ইজারাদার ও তার পক্ষের লোকারে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ দখলে ছিল। কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সরকারী রাজস্ব আদায়ের স্বর্থে মাহাবুবুর রহমানকে খাস আদায়কারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় সাংবাদিকদের সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার হক জানান, সরকারী বিধিমতে খাস আদায়কারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওসি মোঃ এজাজ শফী বলেন, জলমহাল বিরোধে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিটের এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনেন । এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্ততি চলছে ।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)