বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাতকারীদের শাস্তি পেতেই হবে: তথ্যমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ:

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর যারা আঘাত হেনেছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া জনগণের দাবি। তাদেরকে শাস্তি দিতেই হবে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এ সভার আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, যাদের কাছে ভাস্কর্য অগ্রহণযোগ্য, তাদের নিজের বা বাবার ছবিও তাদের রাখার কথা নয়। টেলিভিশনে তাদের চেহারা দেখানো এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা যে ভাস্কর্যবিরোধী পোস্ট দেন, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী সেটিও তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা নয়। অতএব এসব বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। আমি তাদের অনুরোধ জানাবো, দয়া করে ভাস্কর্য আর মূর্তি গুলিয়ে ফেলবেন না এবং জনগণ ও আলেম সমাজকে বিভ্রান্ত করবেন না।

ভাস্কর্য আর মূর্তি এক বানিয়ে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভাস্কর্য পৃথিবীর সব দেশেই আছে, এমনকি সৌদি আরবেও শাসকদের অবয়বসহ বহু ভাস্কর্য আছে। ইরানে ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনীর ভাস্কর্যসহ বহু ভাস্কর্য আছে, তুরস্কে আছে। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র ভাস্কর্য আছে, কবি ইকবালের ভাস্কর্য আছে।

ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ মসজিদভিত্তিক মক্তব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিজন আলেম সেখানে মাসে সাড়ে ৪ হাজার টাকার বেশি সরকারি ভাতা পাচ্ছেন, যা আরো বাড়বে। কওমী মাদরাসার স্বীকৃতির দাবি ১০০ বছরে কেউ পূরণ করেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা এই কওমী মাদরাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং এরপর সেখান থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিও পেয়েছে। এই উপমহাদেশে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি শতবর্ষের পুরনো। কেউ সেই দাবি পূরণ করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।

‘ইসলামের কল্যাণের জন্য বাংলাদেশে আলেম সমাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা কিছু করেছেন, কেউ এতো কাজ করেনি। সেকারণে গুটিকয়েক মানুষের কথায় আপামর জনগণ এবং আলেম সমাজের কেউ বিভ্রান্ত হবেন না’ উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবার মিলিত রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্যই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি। এখানে কাউকে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াতে দেয়া হবে না।

অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যখন আওয়ামী লীগ সর্বপাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করে তখনই ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান রচিত হয়। তার আগে পাকিস্তানের কোনো সংবিধান ছিল না। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার পরই মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা শুরু হয় এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনার নির্মিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে নেতা হিসেবে মানতেন এবং অগাধ শ্রদ্ধা করতেন।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা চিত্ত রঞ্জন দাস এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা প্রমুখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)