তিন দশক পর

আঁখি আলমগীর ছোটবেলায়, অর্থাত্ ১৯৮৪ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবার সঙ্গেই প্রয়াত আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘ভাত দে’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। সেই সিনেমায় অভিনয়ের পর শিশু শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তবে এরপর আর অভিনয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বাবা-মায়ের উত্সাহে নিজেকে গড়ে তোলেন আঁখি একজন সংগীতশিল্পী হিসাবে।

সংগীতজীবনের দীর্ঘ পথচলায় তিনি নিজেকে একজন পূর্ণাঙ্গ সংগীতশিল্পী হিসেবে গড়ে তোলেন। আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে প্রথম দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘বিদ্রোহী বধূ’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেন। আনোয়ার জাহান নান্টুর সুর-সংগীতে সাগর জাহানের সঙ্গে প্লেব্যাক করেন তিনি। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত দুই শতাধিক সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন। সংগীতজীবনে পথ চলতে চলতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার প্রথম সুর করা গানেই কণ্ঠ দেওয়ার সৌভাগ্য হয় আঁখি আলমগীরের। ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’তে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ‘গল্প কথার ঐ কল্পলোকে জানি’ গানে কণ্ঠ দেন।
গানটির সংগীতায়োজন করেছিলেন আঁখি আলমগীরেরই বন্ধু ইমন সাহা। আর এই গানটির জন্যই শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পেলেন রুনা লায়লা এবং শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী হিসেবেও পুরস্কার পেলেন আঁখি আলমগীর। ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আঁখি আলমগীর এই সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন। ছোট্টবেলায় অভিনয়ের জন্য এবং বড়োবেলায় সংগীতের জন্য ৩৫ বছর পর এই প্রাপ্তিতে দারুণ উচ্ছ্বসিত আঁখি আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই সম্মাননায় আমার নামটি ঘোষণা হওয়ার পর আমার বারবার শুধু একটি কথাই মনে হয়েছে যে সঠিক সময়ে আমাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন আমার আরো আগেই গানে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমার বারবার মনে হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের যে ওজন, তা বইবার মতো যে বয়স, সেটা আমার এখন হয়েছে। তাই সঠিক সময়েই পাওয়া হলো আমার। আর শুরুতেই আমি যার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তিনি আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা। আন্টিই মূলত চেয়েছিলেন আমি যেন গানটিতে কণ্ঠ দিই। তার প্রবল উত্সাহের কারণে গানটি গাওয়ার জন্য নিজের ভেতর সাহস সঞ্চয় করেছিলাম। আর আমার বাবা একজন অভিজ্ঞ প্রযোজক, পরিচালক, নায়ক।

তার অভিজ্ঞতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই বাবার আগ্রহেও গানটি করা। যথারীতি শ্রদ্ধেয় গাজী মাজহারুল আনোয়ার অসাধারণ গীতিকবিতা লিখেছেন এবং আমার বন্ধু ইমন চমত্কার মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছেন। যে কারণে একটি ভালো গান হয়েছে। জনপ্রিয় কিংবা সুপারহিট গান হয়তো নয় এটি। কিন্তু এটি একটি ভালো গান। আর ভালো গানই পুরস্কারের জন্য মূল্যায়িত করা হয়। আমাকে, আমার গানকে, শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা আন্টিকে মূল্যায়ন করা হয়েছে, এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি আঁখি কলকাতাতেও সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)