দুর্নীতিবাজদের ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায়

সাতক্ষীরার ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) একজন ইঞ্জিনিয়ার, দীর্ঘ লম্বা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে, অভিযোগের অন্ত নেই, সমস্যার শেষ নেই, কারো অর্থ আত্মসাৎ, কারো সংযোগ বিচ্ছিন্ন, আবার কারো মামলা, জরিমানা, বা উভয় সমস্যায় জনগণ। কেন এত বেশি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে? জানার অপেক্ষায় সংবাদটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

সাতক্ষীরার ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) এর সুলতানপুর ফিডারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায়। এ সময় সুলতানপুর ফিডারের সিস্টেমে ২৫শতাংশ ভর্তুকি গুনতে হত ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) কে। কিন্তু কেন? তার প্রমাণ বেরিয়ে আসে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় সুলতানপুর ফিডারের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে। শুরু হয় অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহার ও মেকানিজম চোরদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান। দেড় বছর সুলতানপুর ফিডারের দায়িত্ব পালনের পর বেরিয়ে আসে তার ফলাফল। ভর্তুকি ২৫শতাংশ থেকে কমে ৯শতাংশের নিচে এসে দাঁড়ায় পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) এর সুলতানপুর ফিডারের। সাড়াশি অভিযানের এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে অবৈধ বিদ্যুত চুরি ও মেকানিজম চোরদের গডফাদারদের তথ্য। একাধিক বিদ্যুত চোরদের নির্ভর যোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় জানতে পারেন সকল বিদ্যুত চুরি ও মেকানিজমের সৃষ্টিকারি ও মাসিক অবৈধ অর্থ গ্রহণকারী সাতক্ষীরা সদর থানার রথখোলার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন। তার মেকানিজমেই চলছিল বিদ্যুত চুরির মহোৎসব। জানা যায়, সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে বিদ্যুত চুরি ও মেকানিজমের সৃষ্টিকারি ফারুকের বিরুদ্ধে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় এর ভিডিও এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সত্যতা মেলায় বিদ্যুত আইনের ৩৯ধারা মোতাবেক ফারুক এবং ব্যবহার কারীর বিরুদ্ধে ওজোপাডিকোর সিদ্ধান্তে সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ১৮মার্চ২০১৮ তারিখে চীফ জুডিশিয়ার আদালতে মামলা করে। মামলার পর থেকে বিদ্যুত অফিসে ফারুককে প্রবেশে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তথ্যানুসন্ধান কালে জানা যায়, দেড় বছরে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় সুলতানপুর ফিডারের দায়িত্বে থেকে বিভিন্ন অপরাধে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জরিমানার কিছু তথ্য মতে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে সাতক্ষীরা শাখায় ৫০৩১৩১৯৯৫ হিসাব নাম্বারে সুলতানপুর নাথপাড়া পুরাতন সাতক্ষীরার ডালিয়া সুলতানা ২৯জানুয়ারি ২০১৮তারিখে ১৪২৪৭টাকা জরিমানার অর্থ জমা দেন, ১৩৭৩০২হিসাব নম্বরে একই সালের ১১ই জানুয়ারি কাছারি পাড়ার মুজিবুর রহমান জরিমানার ২০৬৬৭টাকা জমাদেন, একই ব্যাংকে ১৩১০৬৭ হিসাব নম্বরে ৩/১২/১৮ তারিখে মুন্সিপড়ার বজলুর রহমান ৫১৪৭৪টাকা, ১৩১০৬৯ হিসাব নম্বরে একই এলাকার আনোয়ারা খাতুন ১৯২৪০টাকা, ১৩৪০১০ হিসাব নম্বরে পুরাতন সাতক্ষীরার কুলিন পাড়ার সিরাজুল ১২৭৫৭টাকা, ১৩৪৯৭৫ হিসাব নম্বরে ২৬/০৯/১৮ তারিখে রাজার বাগানের আমজাদ হোসেন ১৮৮১৪০টাকা, ১৪১৯২১ হিসাব নম্বরে ৬/০৩/২০১৮ তারিখে ঝিলপাড়ার আঃ ওহাব ২৮২৩৯টাকা, ১৪৫১৯০ হিসাব নম্বরে ২২/০৭/১৮ তারিখে সুলতানপুরের সফিকুল ইসলাম ২৬১৫টাকা, ১৪১৭০৭ হিসাব নম্বরে ১৮/০২/১৮ তারিখে সুলতানপুরের রুহুলামিন ১৯১৯৯টাকা, ১৪৩৭৩৩ হিসাব নম্বরে ২৪/০৭/১৮তারিখে এল্লারচর মেল্লেকপাড়ার মোজাম্মেল হক ৪০৪১১টাকা, ১৪৩৬২৮হিসাব নম্বরে ০৩/০৪/১৮তারিখে দহাকুলার হোসনেআরা পারভিন ২৪৮১১টাকা, ১৪৯৫৩০হিসাব নম্বরে ২৮/০৮/১৮তারিখে পুরাতন সাতক্ষীরার আঃ সাত্তার ৩৯৪৪টাকা, ১৪৬৭৫২হিসাব নম্বরে ০৭/০৩/১৯তারিখে সুলতানপুর বকুলতলার রুহুলামিন১১২০৯টাকা, ১৪১৮৩০ হিসাব নম্বরে২২/০৩/১৮ তারিখে ঝিলপাড়ার মাহবুব ১৯৭৬৩টাকা, ১৪৫১৯০ হিসাব নম্বরে ২২/০৭/১৮তারিখে দহাকুলার সফিকুল ২৬১৫টাকা জরিমানা হিসাবে জমা প্রদান করেন। সুলতানপুর আলমের ঘেরের বাসায় দীর্ঘদিন কোন মিটার ছাড়াই অবৈধ সংযোগে এসি, সেচদেওয়া ২টি মটর সহ অনেক লাইট ব্যবহারের সময় হাতেনাতে ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ২টি সেচ মটর, অবৈধ বিদ্যুত সংযোগের তার জব্দ কওে এনে ১০২০০০টাকা জরিমানাসহ মামলা দেওয়া হয়, প্রিপেইড মিটারে অবৈধভাবে অভিনব কায়দায় ডিজিটাল চুরির দায়ে কাটিয়া

নারকেরতলায়০৬/০৮/১৯তারিয়ে ৫০২৫০০৫৯১২৩নং মিটারে ১২৭৭৫৪টাকা ও ৫০২৫০০৫৯১২৬নং মিটারে৬৪৪৫৪টাকা জরিমানা করেন। হিসাব মতে জানা যায় ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় সুলতানপুর ফিডারের দায়িত্বে থেকে দেড় বছরে প্রায় সাত লক্ষ টাকা জরিমানা ও ব্যংকজমা করান। যা ছিল সাতক্ষীরার ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) এর যুগ সেরা এক নজির বিহীন দেশ ও জাতির উন্নয়নের কর্মক্ষেত্রের বীরত্বেও সাথে সাহসিকতার পরিচয়।

এদিকে সাতক্ষীরার ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) এর ভিতরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় ও ওজোপাডিকোর দেওয়া মামলার পর মামলায় জড়িয়ে যেতে থাকা ফারুকের গাত্রদাহ শুরু হয়। বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক ফারুকের অপরাধের তথ্যচিত্র। নিজেকে বাঁচাতে ফারুক বিভিন্ন দপ্তরে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায়ের বিরুদ্ধে শুরু করে নামে বে নামে মিথ্যা অভিযোগ। অনেক অভিযোগকারিরা জানেননা তিনি অভিযোগ করেছেন। এ প্রতিবেদকের হস্তগত হওয়া কপিতে ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগে জানা যায়, ১) ৫০৩১৪০৮০৩নং মিটার ব্যবহার কারীকে মিটার বাইপাস করার অপরাধে ১৬১৯ইউনিটের বিলের জরিমানা স্বরুপ ৪৮৪২২টাকা জরিমানা করেন। অভিযোগে ঐ টাকা ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় আত্মসাৎ করেছেন বলা হলেও অভিযুক্ত রবিউল তিনি নিজ হাতে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে জরিমানার টাকা জমা দেন বলে জানা যায় এবং ব্যাংক কপি এ প্রতিবেদক সংগ্রহ করেন।
২) ৫০৩১৪১৮৩০নং মিটারের মাহাবুবুর রহমান মিটার টেম্পার কারিকে ১৯৭৬৩টাকা জরিমানা বিদ্যুত অফিসের ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অভিযোগে ওই টাকা ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় আত্মসাৎ করেছেন বলা হলেও মাহাবুবুর রহমান নিজে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৫০৩১৪১৮৩০নং একাউন্টে ২২/০৩/১৮তারিখে জমা দেন তার কপি এ প্রতিবেদক সংগ্রহ পূর্বক সংরক্ষণ করেছেন।

৩)৫০৩১৪০৫০২আজমিরা বেগমকে মিটার বাইপাস করার অপরাধে ২৪৭৫৩টাকা জরিমানা করেন। অথচ ঐ সময় রাজি রায ওই ফিডারের দায়িত্বে ছিলেন না বলে জানা যায়। পরবর্তিতে তিনি ২/০৫/১৯তারিখে অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন করে সি-৪৭/১৯নং মামলা দেন।

অভিযোগে ওই টাকা ও ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায় আত্মসাৎ করেছেন বলা হলেও আজমিরা বেগম নিজেই আই এফ আই সি ব্যাংকে ২০/০৩/২০১৮তারিখে জমা দেন, যার কপি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত।
৪)৫০৩১৩১২১৫নং মিটার ব্যবহারকারি রেট পরিবর্তনের অভিযোগে ১৪৯৯৫টাকা জরিমানা করিলে তিনি নিজ হাতে ২০/০৩/২০১৮তারিখে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেন, যার স্ক্রল নং-৮৭। কপি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত।
৫)৫০৩১৪৩৭১৫নং মিটার ব্যবহার কারিকে কোন কোন জরিমানা বা অর্থ লেনদেন হয় নাই। তিনি নিজে লিখিত জানিয়েছেন যে, আমি দরখাস্ত কারি নাই। যার কপি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত। ৬ও ৭ নং একই অবস্থা।
এদিকে সাতক্ষীরার ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) যখন ইঞ্জিনিয়ার রাজিব রায়কে তার সততার কর্মদক্ষতার ও সাহসিকতার জন্য পঞ্চমুখ, ঠিক সেই সময় পিছন থেকে ছুরি মারার প্রচেষ্টায় দুর্নিতিবাজদের পরিচালনা কারিরা। জেলার ওজোপাডিকো থেকে দুর্নিতিবাজ ও দালালদের হটিয়ে যদি রাজিব রায়ের মত সৎ নিষ্ঠাবান সাহাসি অফিসার চান জেলার সর্বস্তরের জনগণ।

এ বিষয়ে জানার জন্য সাতক্ষীরার ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, আমি এ বিষয়ে আগামীকাল বিস্তারিত জানাব।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)