নুসরাত হত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে আ.লীগ নেতা মাকসুদসহ ৪ আসামি

ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার মামলায় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুর রহমানসহ চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন তাদের কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মাকসুদুর রহমান ছাড়া বাকি তিন আসামি হলো– সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মোহাম্মদ শামীম ওরফে শামীম ও  আরিফুল ইসলাম।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, চার আসামিকে পাঁচ ও তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ‘আসামিদের জবানবন্দি নেওয়ার কাজ শেষ হলে অভিযোগপত্র তৈরির কাজে হাত দেবে পিবিআই।’

পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, ‘নুসরাত হত্যায় ২১ জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই। প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ এপর্যন্ত ১২ জন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। এর মধ্যে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দুই তরুণীসহ পাঁচজন রয়েছে। নুসরাতের গায়ে আগুন লাগাতে বোরকা পরে আসে দুর্বৃত্তরা। তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। ইতোমধ্যে কেরোসিন ও বোরকা বিক্রেতা ও বোরকা দোকানের কর্মচারী, নুসরাতের দুই বান্ধবী, মাদ্রাসার একজন নৈশপ্রহরী ও একজন পিয়নের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। এই সাতজনই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।’

উল্লেখ্য, নিহত নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে তিনি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এ ঘটনায় নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে গত ৮ এপ্রিল ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।১০এপ্রিল মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)