সাইকেলে রাজশাহীর পথে সাতক্ষীরার ৮১ বছরের জয়নাল

নতুন সাইকেলে রাজশাহীর উদ্দেশে সাতক্ষীরা ছাড়লেন ৮১ বছরের জয়নাল আবেদিন। তিন দিনের মাথায় সেখানে পৌঁছে তিনি অংশ নেবেন তাবলীগ ইজতেমায়। দু’দিনের তাবলীগ ইজতেমা শেষে আবারও তিনি নিজের সাইকেল চড়ে ফিরে আসবেন সাতক্ষীরার বাড়িতে।

জয়নাল আবেদিন জানান, সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ২৭২ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিনদিন। একটি ফেরি পার হতে হবে তাকে। আগামী ১ মার্চ অনুষ্ঠেয় তাবলীগ এজতেমায় অংশ গ্রহণ শেষে বাড়ি ফিরবেন তিনি।

আজ শনিবার প্রত্যুষে সাতক্ষীরা ছাড়েন তিনি। এ সময় তিনি বলেন ২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছর তিনি এভাবেই সাইকেল চালিয়ে রাজশাহীর নওদাপাড়ার এজতেমায় অংশ নিয়ে আসছেন। কোথায় রাত্রি যাপন করবেন জানতে চাইলে জয়নাল আবেদিন বলেন চলতি পথে কোনো না কোনো মসজিদে তিনি রাত্রি যাপন করবেন। শনিবার রাতে ঝিনাইদহর কোনো মসজিদে রাত্রি যাপন করবেন তিনি। রোববার প্রত্যুষে আবারও রওনা হয়ে পৌছাবেন লালন শাহ ব্রিজের অপরপ্রান্তে পাবনা জেলার পাকশিতে। সোমবার কাকডাকা ভোরে তিনি আবারও রওনা হয়ে পৌছাবেন রাজশাহীর চারঘাটে। এদিন তিনি তার গন্তব্যস্থল রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইজতেমার ময়দানে পৌছে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।

জয়নাল জানান চলার পথে তার কোনো সঙ্গী থাকছে না। সাথে তিনি রেখেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যানের দেওয়া প্রত্যয়নপত্র। আছে কিছু শুকনো খাবার, রুটি,পানি ও স্যালাইন ছাড়াও কয়েকটি ব্যথার ট্যাবলেট। কাছে আছে সামান্য কিছু টাকা। সাইকেলে হাওয়া দেওয়ার পাম্পারটিও রয়েছে তার কাছে। সাইকেলের হ্যান্ডেলে লাগিয়েছেন একটি ব্যানার। এতো দুরে সাইকেলে যাতায়াত করায় কষ্ট হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘আমার অভ্যাস সাইকেল চড়ায়’। বাসে চড়লে পা ফুলে যায় জানিয়ে তিনি বলেন ‘সাইকেলে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এতে আমার কোনো কষ্ট হয়না। সাইকেল চড়তে আনন্দ পাই’। তিনি জানান তার স্ত্রী বিয়োগ ঘটেছে চার বছর আগে। বাড়িতে আছেন ছেলের বউ সাথী বেগমসহ নাতি পুতিরা। দোয়া শেষে তারা তাকে বিদায় জানিয়েছেন । পাড়ার লোকজনও তাকে দোয়া করেছেন বলে জানান জয়নাল আবেদিন। তিনি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছ থেকেও বিদায় নেন ২১ ফেব্রুয়ারি।

৮১ বছরের জয়নাল আবেদিন এতোদিন ব্যবহার করতেন একটি পুরনো সাইকেল। এবার তিনি হাতে পেয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের একটি নতুন সাইকেল। চার ছেলে ও চার মেয়ের বাবা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের কাওনডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদিন বলেন যতো দিন শারীরিক শক্তি সামর্থ্য আছে ততদিন ধরে তিনি সাইকেলেই রাজশাহী যেতে চান। দুর্যোগ দুর্বিপাক ঝড় বৃষ্টি হলেও তিনি তার স্বেচ্ছাপ্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে চান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)