সাতক্ষীরায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে মহাজন কর্তৃক এক ব্যক্তির ভিটাবাড়ি বিক্রি

সাতক্ষীরায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে মহাজন এক ব্যক্তির ভিটাবাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মায়ের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে মাত্র ৬০ হাজার টাকা দিয়ে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে এক লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামের লুৎফররহমান গাজীর ছেলে মো. মিলন হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার মাতা আনোয়ারা খাতুন শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমি আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় মায়ের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না। অথচ আমার সম্পদ বলতে ২ কাটা জমিতে ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। একমাত্র সন্তান হওয়ায় মায়ের অসুস্থতায় আমি দিশাহারা হয়ে পড়ি। আমার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে দমদম এলাকার তৌহিদ সামান্য সুদে ধার হিসাবে আমাকে ৬০ হাজার টাকা প্রদান করে। কিন্তু টাকা গ্রহণের পর থেকে তৌহিদ সুদের টাকা পরিশোধের জন্য আমার উপর চাপ দিতে থাকে। একদিকে মায়ের অসুস্থতা, অন্যদিকে এতগুলো টাকা আমার পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। অথচ তৌহিদ কৌশলে টাকা দিয়ে তা সুদে আসলে আদায়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে।

মিলন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, টাকা শোধ দিতে না পারায় তা আদায়ের জন্য কলারোয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তুলসিডাঙ্গা গ্রামের কাজী আসাদুজ্জামান শাহাজাদা, কাজী বাবু, মুরারিকাটি এলাকার কেলু রানা, রাজু, হাসপাতাল রোডের শাকিল খান জজ ও লোহাকুড়া এলাকার রুবেলসহ কয়েকজন ব্যক্তিকে ভাড়া করে টাকার জন্য আমার উপর চাপ দিতে থাকে। তারা আমার ভিটাবাড়ি বিক্রি করে দ্রুত টাকা শোধ দিতে বলে। টাকা না দিলে তারা আমাকে খুন-জখমের হুমকি দেয়। তাদের হুমকি ধামকিতে ভীত হয়ে একপর্যায় বাধ্য হয়ে আমি আমার একমাত্র সম্বল ভিটাবাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই।

তিনি আরো বলেন, ভিটাবাড়ি বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে তৌহিদ, শাহাজাদাসহ সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা আমাদের পথরোধ করে ক্রেতার কাছ থেকে জোরপূর্বক ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার একটি চেক গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তারা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেয়। এছাড়া ছেলেদের খরচ বাবদ আরো ৫ হাজার টাকা আদায় করে। মাত্র ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তারা আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা আদায় করেছে। ফাঁদে ফেলে ভিাটাবাড়ি বিক্রি করিয়ে জোরপূর্বক সবটাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। অর্থলোভী তৌহিদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর খপ্পরে পড়ে আমি ও আমার পরিবার এখন পথে বসেছে। তিনি বাকি টাকা ফেরতের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)