শ্যামনগরে ম্যানেজারের লাথির আঘাতে ঘের কর্মচারীর নিহত

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ম্যানেজার উজ্জল মন্ডলের লাথিতে ঘের কর্মচারী হরিপদ সরকারের (৩২) মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা নয়টার দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন গোলাখালী গ্রামে সফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন চিংড়ী ঘেরে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। নিহতের দু’টি কন্যা সন্তান রয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর প্রধান অভিযুক্ত উজ্জল মন্ডল পালিয়ে গেছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ঘের ম্যানেজারের পক্ষে একটি বিশেষ মহল বিশেষ তৎপরতা চালাচ্ছে বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে।

নিহতের ভাই বিমল সরকার জানান, চিংড়ি ঘেরের ম্যানেজার উজ্জল মন্ডল বৃহস্পতিবার সকালে একই মালিকের ঠাকুরঘেরী এলাকার ঘেরের পানি বন্ধ করে আসার নির্দেশ দেয় হরিপদকে। কিন্তু সে বাধা পেয়ে পানি বন্ধ না করে ফিরে আসায় উজ্জ্বলের সাথে তার বাদানুবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে উজ্জ্বল মন্ডল ও অপর একটি ঘেরের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম হরিপদকে মারধর শুরু করে। এসময় হরিপদ সরকারের বুকে লাথি মেরে উজ্জ্বল তাকে মাটিতে ফেলে দেয়ায় ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

তিনি অভিযোগ করে আরো জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল তার ভাইয়ের হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে (স্ট্রোকে মৃত্যু) নেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী শেফালী সরকার জানান, মারধরের সময় স্বামীর চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে যাওয়ার সময় উজ্জলের লাথি খেয়ে হরিপদকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা হরিপদকে মৃত দেখে।

নিজেদের অর্থ-বিত্ত না থাকার কারণে ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি যাতে ধামাচাপা না পড়ে সেজন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এদিকে এবিষয়ে কথা বলার জন্য উজ্জ্বলের বাড়িতে যেয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অপর ঘের কর্মচারী নিতাই শীল জানান, তার সামনেই মারধরের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উজ্জ্বলের লাথির আঘাতে মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর হরিপদ সরকারের মৃত্যু হয়।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম জানান, টাকা পয়সার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দুই ঘের কর্মচারীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে হরিপদ সরকার ভাত খাওয়ার জন্য টিউবওয়েলে যাওযার পথে পড়ে যেয়ে তার মৃত্যু হয়। তবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনসহ অধিকতর তদন্তশেষে হরিপদ সরকারের মৃত্যু নিয়ে রহস্য উন্মোচন হবে।
এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)