কূটনীতিকরা দায়িত্ব দিলেন ড. কামালকে

বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে ড. কামাল হোসেনকে দায়িত্ব দিলেন কূটনীতিকরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাট যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। ঢাকা ত্যাগের আগে তিনি সর্বশেষ বৈঠকটি করেন ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের আলোকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই একটা নির্বাচন করা যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন যেন শক্তিশালী হয়, নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্বে যেন নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসন চলে আসে। সরকার যে অঙ্গীকার করেছে, সে অঙ্গীকারের ওপর আস্থা রেখেই সব বিরোধী দলের উচিত নির্বাচনে যাওয়া।’

বার্নিকাট আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বিএনপির মধ্যে একটা বড় স্রোত আছে যারা নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চায়। এটা ভুল এবং বিভ্রান্তিমূলক হবে বলে তিনি ড. কামালকে বলেছেন।

ড. কামাল বলেছেন, ‘যে সংলাপ শুরু হয়েছে তা শতভাগই সফল। সংলাপ আরও এগোলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে।’

বার্নিকাট ড. কামালকে বলেছেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ক্ষেত্রে বড় নির্ধারকের ভূমিকা পালন করতে পারেন তিনি।

আজ ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ভারতীয় বিদায়ী হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেই ফোনালাপের সময় গণফোরামের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীও ড. কামালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, নির্বাচনে যদি সকল দল অংশগ্রহণ করে, তবে নির্বাচনে কারচুপি করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ভারতের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেনকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়।

শ্রিংলা মনে করেন, ‘নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে কারচুপি করা সহজসাধ্য হবে না এবং গণতন্ত্র এগিয়ে যাবে।

বার্নিকাট ও শ্রিংলা দুজনকেই ৪টি ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন আশ্বস্ত করেছেন। এগুলো হলো:

১. তিনি নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কখনোই সহিংস আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি দেবে না। আন্দোলনের কর্মসূচি হবে নিয়মতান্ত্রিক, জনসংযোগমূলক সভা, সমাবেশ ইত্যাদি। জনগণের ক্ষতি হয়, জনগণের জানমালের বিঘ্ন ঘটে, এরকম কোনো সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি তিনি দেবেন না।

২. সরকারের সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি কখনোই শেষ হবে না। বরং তিনি একটি ‘মিনি টিম’ গঠন করে সরকারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সংলাপ চালিয়ে যাবেন।

৩. কাউকে হটানো বা কারও অধীনে নির্বাচন যাওয়া এমন মনোভাব তিনি কখনোই পোষণ করেননি। ঐক্যফ্রন্ট থেকেও এমন মনোভাব পোষণ করতে দেওয়া হবে না। বরং যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেক্ষেত্রে তাঁরা আপত্তি জানাবেন না।

৪. গণতান্ত্রিক ধারা যেন অব্যাহত থাকে, সেজন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চেষ্টা করবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যার ফলে গণতান্ত্রিক ধারা বিচ্যুত হতে পারে।

ড. কামাল হোসেন দুই বিদায়ী কূটনীতিককেই আশ্বস্ত করেছেন, ‘বিএনপির একটি বড় অংশ নির্বাচনে যেতে আগ্রহী। তাঁরা বলেছে, তাঁরা যা কিছু করেছে, সব কিছু নির্বাচনের জন্যই করছে।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)