মিসির আলি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে এবার চঞ্চল

অবিন্যস্ত চুল। চোখে চশমা। কিন্তু দৃষ্টি এত প্রখর যে তাকালে মনে হবে আপনার ভেতরটা পড়তে পারছেন।

এক কথায়, এমনটাই মিসির আলি। হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্র ঠিকই। কিন্তু এই মিসির পরিচালক অনম বিশ্বাসের। আসন্ন ‘দেবী’ ছবির জন্য মিসিরকে ঠিক এ ভাবেই তৈরি করেছেন অনম। আর মিসির চরিত্রের অন্দরে থাকা মানুষটি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।

সাংবাদিকদের সাথে তাই খুলে বললেন নিজের কিছু কথা,

মিসির আলি পড়েননি, এমন বাঙালির সংখ্যা কম। সেই চরিত্রই এ বার বড়পর্দায়। চঞ্চলের কাছে কাজটা কতটা কঠিন ছিল?

কঠিন যে ছিল, তা এক কথায় স্বীকার করে নিলেন চঞ্চল। হেসে বললেন, ‘‘চ্যালেঞ্জিং চরিত্র, সাধারণ চিত্রনাট্যের চরিত্র হলে এত চিন্তা করতাম না। মিসির আলি এত জনপ্রিয় যে প্রত্যেকে নিজের মনে ইমেজ তৈরি করেন। সবার ইমেজ তো সমান নয়। সেটা মেলানো কঠিন ছিল। দর্শক উপন্যাসে কী ভাবে পড়েছেন, আর পর্দায় কী ভাবে দেখছেন, সেটা কিন্তু ভাববেন। ফলে অনেক গবেষণা করে তৈরি করতে চেষ্টা করেছি আমরা। তবে সিনেমার ক্ষেত্রে বইয়ের চরিত্র ১০০ শতাংশ আনা সম্ভব হয় না নানা কারণে…।’’

ঠিকই। তবুও প্রথম যখন মিসির আলির লুক প্রকাশ্যে এল, তা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। মেনে নিলেন চঞ্চল। ‘‘মিসির আলিকে এতদিন বড় পর্দায় দেখেননি দর্শক। বাংলাদেশে প্রচুর পাঠক রয়েছেন। আপনাদের ওখানেও…। প্রচন্ড আগ্রহ আছে দর্শকদের ‘দেবী’ নিয়ে। আমি যে চরিত্রই করি, সেটায় ডুবে থাকি। সাধনা করি। সকলে হেল্প করেছেন। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, বাকিটা দর্শকদের হাতে।’’

অনম বেছে নিয়েছেন হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘দেবী’। মিশির আলি ছাড়া এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র রানু। এই ভূমিকায় অভিনয় করছেন জয়া আহসান। শুধু তাই নয়, জয়ার প্রযোজনা সংস্থা ‘C-তে সিনেমা’র প্রথম প্রয়াস ‘দেবী’।
প্রযোজক জয়া, নাকি অভিনেত্রী, ‘দেবী’তে কাকে এগিয়ে রাখবেন চঞ্চল? এ বার স্মিত হাসলেন অভিনেতা। বললেন, ‘‘কোআর্টিস্ট ভাল হলে বিশ্বাস করি কাজের মান বেড়ে যায়। রানুর চরিত্রটা জয়ার থেকে ভাল কেউ করতে পারত না। এই চ্যালেঞ্জটা নিতে ভাল লাগে। তাই কোনও প্রেশার মাথায় নিইনি। আনন্দ করে কাজ করেছি। আমি তো জয়াকে কোআর্টিস্ট হিসেবেই দেখেছি। ও এখানে প্রোডিউসার হিসেবে পরিচিতও হয় না। আমি মিসির আলি, ও রানু। এ ভাবেই দেখেছি ওকে। প্রোডাকশনকে কখনও প্রভাবিত করতে দেখিনি। প্রোডিউসার হিসেবে নিজেকে জাহির করার মানসিকতা ওর নেই, করেওনি।’’

অর্থাত্ প্রযোজক জয়াকে ফুল মার্কস দিলেন চঞ্চল। ‘‘একটা অন্য ব্যাপারও আছে। বলব?’’

নিশ্চয়ই…।

‘‘অভিনেতা প্রযোজক হলে অনেক সুবিধে হয়। আমাদের, অর্থাত্ অভিনেতাদের অনেক অসুবিধে বুঝতে পারে। এমনি কেউ প্রযোজক হলে সেটা হয় না’’ অকপট চঞ্চল।

মুক্তির দিন এখনও ঠিক হয়নি। তবে খুব তাড়াতাড়িই মুক্তি পাবে ‘দেবী’। বাংলাদেশ তো বটেই, ভারতের দর্শকরাও মিসির আলির অপেক্ষায় রয়েছেন। ফোন ছাড়ার আগে চঞ্চল বললেন, ‘‘পুরো টিম সততার সঙ্গে কাজ করেছি। দর্শকদের ভাল লাগবে এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি। অভিনেতার সঙ্গে সঙ্গে আমি দর্শকও বটে। মেকিং, অভিনয়, সিনোমাটোগ্রাফি সবই আন্তর্জাতিক মান ছুঁতে পেরেছি বলে মনে হয়।’’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)