যুক্তরাষ্ট্রে কঠিন হচ্ছে গ্রিন কার্ড, বিপাকে অভিবাসীরা

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতিতে নতুন প্রস্তাবণা ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ প্রস্তাবণার ফলে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেছে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সংগঠন দ্য সাউথ এশিয়ান আমেরিকানস লিডিং টুগেদার (সল্ট)। এই নতুন প্রস্তাবনার ফলে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে যারা ইতোমধ্যে সরকারি সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন এমন বিদেশীদের জীবন কঠিন হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার সংগঠনটি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে অর্থনীতিবিষয়ক ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস। নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী, যেসব অভিবাসীরা খাদ্য, বাসস্থান বা স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন তারা বোঝা হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং তাদের গ্রিন কার্ড পাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান হতে পারে।

সংগঠনটির মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অভিবাসন নীতির প্রস্তাব ২০১৬ অর্থবছরে ১০ শতাংশেরও বেশি গ্রিন কার্ড (স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি) সুবিধা পাওয়া দক্ষিণ এশীয় আমেরিকান সম্প্রদায়দের ওপর আঘাত হানবে।

দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটিজ বিভাগ সম্প্রতি নতুন অভিবাসন নীতি জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, যেসব অভিবাসীরা পাবলিক চার্জ নীতির আলোকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন, গিন কার্ড পেতে হলে তাদেরকে অবশ্যই দেখাতে হবে যে, তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। অন্যথায় তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়া হবে না।

আগের পাবলিক চার্জ নীতির আলোকে অভিবাসীরা স্বাস্থ্য সেবা, খাবার ও বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি ভর্তুকি পেয়ে আসছিলেন।

ওয়াশিংটনভিত্তিক পিউ রিসার্চ সেন্টার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রতি চার অভিবাসীর একজন বাংলাদেশি ও নেপালি এবং প্রতি তিনজনে একজন ভুটানের নাগরিক দারিদ্র্য সীমার মধ্যে বসবাস করছেন। নতুন এই নীতি বাস্তবায়িত হলে এসব দারিদ্র্যপাীড়িত অভিবাসীকে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে।

অভিবাসীরা রাষ্ট্রীয়ভাবে আগে যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন, নতুন নীতি সে অধিকার ভোগ থেকে বঞ্চিত করবে মন্তব্য করেছে সল্টের নির্বাহী পরিচালক সুমন রঘুনাথান জানিয়েছেন, এর ফলে অভিবাসী পিতা-মাতারা তাদের সন্তানদের দেখাশোনা করতে পুরোপুরি বঞ্চিত হবেন। এতে করে তারা আসলে কোনটা গ্রহণ করবেন নাগরিকত্ব না রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা-দুইটার যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে। একটি পেতে হলে অন্যটি হারাতে হবে।

সেক্রেটারি অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কার্স্টজেন নিয়েলসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যারা অভিবাসনের আবেদন করবেন; তাদের আর্থিকভাবে নিজেদের সাহায্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। তিনি বলেন, অভিবাসীদের আত্মনির্ভরশীলতায় উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে; যাতে তারা মার্কিন করদাতাদের জন্য বোঝা না হয়। সেজন্য প্রস্তাবিত আইন কংগ্রেসে উত্থাপন করা হবে।

কংগ্রেসম্যান ববি স্কট বলেছেন, এই নীতি একই সঙ্গে নিষ্ঠুর, সাংঘর্ষিক ও আমেরিকার মূলনীতির পরিপন্থী। এর মাধ্যমে হাজার হাজার অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ হারাবেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)