বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ের জন্য কর্মী নিয়োগে বিজ্ঞাপন, বেতন ৩ লাখ!

কয়েক মাস আগেই বেরিয়েছিল বিজ্ঞাপনটা- ‘মালিককে ঘুম থেকে তোলার জন্য কর্মী চাই’! কিন্তু কার জন্য এমন বিজ্ঞাপন, সেই প্রশ্নেই সরগরম ছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। তবে উত্তরটা মিলেছে সম্প্রতি। এক ভারতীয় কোটিপতির কিশোরী-কন্যা সবে ভর্তি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার যাতে কোনো রকম অসুবিধা না হয়, তার জন্যই এত আয়োজন!

স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রু বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছে ওই মেয়েটি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিতে না দিতেই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে সে। জুটে গেছে ‘সব চেয়ে অভিজাত’-এর তকমাও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী বরাবরই বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে বলেই কি বিলাসী জীবন ছাড়তে হবে? এটা তো আর কয়েক মাসের ব্যাপার নয়! পুরো চার বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটাতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী বরাবরই বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য কি সে সব ছাড়তে হবে তাকে? এটা তো আর কয়েক মাসের ব্যাপার নয়! পুরো চার বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটাতে হবে। কিন্তু এত দিন থাকতে গেলে সহপাঠীদের সঙ্গে তো ঘর শেয়ার করতে হবে! এমনকি নিজের কাজ নিজেকেই করতে হবে!

মেয়ের এহেন অসুবিধায় এগিয়ে আসে পরিবারই। বাড়ির আদরের মেয়ের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য এলাহি কাণ্ড। প্রথমেই সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি একটি বিশাল বাড়ি কিনে ফেলেছে পরিবারটি। মাঝেমধ্যে সেখানে গিয়ে মেয়েকে সঙ্গ দেবেন তার বাবা-মা-ভাই।

কিন্তু মেয়ের কাজ কে করবে-এ চিন্তা থেকেই মেয়ের জন্য ১৩ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা। আর এই কর্মী নিয়োগ করার জন্যই যোগাযোগ করা হয়েছিল এক অভিজাত নিয়োগকারী সংস্থা ‘সিলভার সোয়ান’-এর সঙ্গে। তারা একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, ‘শহরতলিতে ঘরের কাজের জন্য ১৩ জন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মী চাই। বেতন বছরে ৩০ হাজার পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় ৩২ লাখ ৭১ হাজার। মাসিক বেতন দাঁড়াবে ২ লাখ ৭১ হাজার।

এখানেই শেষ নয়, বিজ্ঞাপনে এ-ও বলা ছিল যে, ঘরের কাজের নারীকর্মীকে কর্মশক্তিতে ভরপুর, উচ্ছ্বল হতে হবে। ওই নারীকর্মীর কাজ হবে- রুটিন অনুযায়ী অন্য কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ওয়ারড্রোব গ্রুমিং ও মেয়েটির ব্যক্তিগত শপিংয়ে সাহায্য করা। শুধু তা-ই নয়, মেয়েটির ঘুম থেকে উঠে ক্লাসে যেতে দেরি না হয়ে যায়, সেই কারণে মেয়েটিকে ঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়াটাও নারীকর্মীর কাজের মধ্যে পড়বে।

বাকি থাকল খাওয়া-দাওয়া। সে বিষয়েও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শেফ খুঁজেছে পরিবারটি। বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল-‘ওই ছাত্রীর জন্য রান্না করতে যারা ইন্টারভিউ দেবেন, তাদের ভারতীয় খাবার রান্না জানতে হবে। বিশেষ করে, দক্ষিণ ভারতীয় খাবার। এ ছাড়াও, চাইনিজ ও ইটালিয় খাবারদাবার তৈরিতেও দক্ষ হতে হবে শেফকে।’

এ ছাড়া, সাহায্যকারী কর্মীদের দলে থাকছেন এক জন মালি, এক জন গাড়ির চালক ও এক বাটলার।

কে সেই কোটিপতি কন্যা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও। কারণ কোনো সংবাদমাধ্যমেই এখনও মেয়েটি বা তার কোটিপতি বাবার নাম প্রকাশিত হয়নি। তবে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম মজা করেই পাঠকদেরই প্রশ্ন করছে, ‘কে ওই ছাত্রী? আপনারাই অনুমান করে দফতরে ই-মেল করুন।’

এক সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছিলেন ডিউক ও ডাচেস অব কেমব্রিজ উইলিয়াম ও কেট। কিন্তু সেই সময় উইলিয়ামও আর পাঁচ জন পড়ুয়ার মতো খুব সাধারণ ভাবেই থাকতেন। তাই ভারতীয় কোটিপতি-কন্যার জন্য এমন আয়োজনে হতভম্ব অনেকেই।

সূত্র: আনন্দবাজার

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)