আশাশুনির সাদ্দাম বাহিনী বেপরোয়া!
কালিগঞ্জের ঘের মালিকের কাছে দাবিকৃত ১ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে কর্মচারীকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা। এসময় তারা লুট করেছে ঘেরের চিংড়ি মাছ, স্যালো মেশিন, রাজহাঁস, গাভী ও নগদ টাকা। আর এসব ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরার আলোচিত মামুন হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি এবং নাশকতা ও হত্যা মামলাসহ প্রায় ১ ডজন মামলার আসামি এলাকায় সাদ্দাম বাহিনী খ্যাত জামায়াত নেতা রফিকুল হাসান ও মজনু মোশারফ বাহিনীর নেতৃত্বে।
কালিগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা গ্রামের বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে ইসলাম কবির চৌধুরী (৫৫) ও কয়েকজন মিলে কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের চান্দুলিয়া এলাকায় পৈত্রিক এবং খরিদা জমিতে মাছের ঘের করছেন। ওই এলাকায় কুখ্যাত ভূমিদস্যু ও চাঁদাবাজ বহু মামলার আসামি জামায়াত নেতা আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে রফিকুল হাসান (৫৫) ও তার সহোদর মজনু মোশারাফ (৪৪) ঘেরমালিক ইসলাম কবির চৌধুরীর নিকট ১ লক্ষ টাকা টাকা চাঁদা দাবি করে কিছুদিন পূর্বে ভয়ভীতি প্রদর্শন, মাছ লুটপাট ও ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে ঘের দখলের চেষ্টা করলে তিনি আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেন। এরপরও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মাছের ঘের জবরদখলের চেষ্টা চালায় ওই সন্ত্রাসী বাহিনী। এঘটনায় কালিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ঘের মালিক ইসলাম কবির চৌধুরী। ওই মামলায় জামিন নিয়ে পরবর্তীতে গত ৭ জুন সকাল ৮ টার দিকে আবারও রাম দা, বল্লভ, চাপাতি, দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রফিকুল হাসান ও মজনু মোশারাফের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী মাছের ঘেরে যেয়ে বোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তারা ঘেরের কর্মচারী সিরাজুল ইসলামের (৪২) উপর হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙে দেয়। এসময় তারা তান্ডবলীলা চালিয়ে প্রায় ১মন বাগদা চিংড়ি, একটি স্যালো মেশিন, একটি গাভী, ১০ টি রাজহাঁস ও নগদ টাকাসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত সিরাজুল ইসলাম বর্তমানে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন বলে জানা গেছে। এঘটনায় ঘের মালিক ইসলাম কবির চৌধুরী বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় রফিকুল হাসানকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রফিকুল হাসান, মজনু মোশারফ, তার পুত্র রোশনাত আফ্রিদী এলাকায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তারা এলাকায় সবার কাছে সাদ্দাম পার্টি নামে পরিচিত। তারা জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার এবং জামায়াতের নাশকতায় অন্যতম অর্থ জোগানদাতা। এলাকায় সংখ্যালঘুর জমি দখল, সাধারণ নিরীহ জনগণের সম্পদ জবরদখল ও আত্মসাতসহ নানা অপকর্মের হোতা হলেও শ্রীউলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ সরদারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ড করেও সব সময় ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এছাড়াও শ্রীউলা গ্রামের বাবর আলী সরদারের ছেলে শ্রীউলা ইউনিয়ন সৈনিক লীগের সভাপতি হত্যাসহ প্রায় দু’ডজন মামলার আসামি লাকী সরদার (৪৫) নিজেই সামনে থেকে সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রগুলো জানায়। কুখ্যাত সাদ্দাম পার্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা পুলিশ প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।