মসজিদে নামায পড়ার মতো কেউ নাই!
ডেস্ক রিপোর্ট:
ডিবি পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় কিছু নির্দোষ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এখন এলাকার ভিতরে একজন মানুষও নাই। গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে গেছে। এমনকি মসজিদে নামায পড়ার মতো কেউ নাই। এছাড়া এলাকার মহিলারাও এখন আতঙ্কের মধ্যে আছে। কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সদর ইউনিয়নের পানাইতাপাড়া গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুল্লাহ।
গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে ওই গ্রামটি। এখন সন্ধ্যা নামলেই গ্রেফতার এড়াতে ওই গ্রামের পুরুষরা ঘর-বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনসহ নানা স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। আবার অনেকেই ঘটনার পর থেকেই অজানা স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গত ২০ মে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১১৫ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
রোববার সকালে সংবাদকর্মীরা ওই গ্রামে গেলে ইউপি সদস্য আসাদুল্লাহ ঘটনার বিবরণ দিয়ে এমন অস্বস্থীকর পরিস্থিতির সমাধান চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মে রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী পানাইতাপাড়া গ্রাম্য বাজারে মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দল। এ সময় সুমন মিয়া নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পর সুমনের দেহ তল্লাশি করে ৫৫ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই মাদক ব্যবসায়ীর চাচা শাহজাহানের নেতৃত্বে আসামির বড় ভাইসহ প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি গোয়েন্দা পুলিশ দলের উপর হামলা চালিয়ে সুমনকে ছিনিয়ে নেয়। এবং ওই হামলায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়। এছাড়া এএসআই হাবিবুর রহমানের ব্যবহৃত একটি এনড্রোয়েড সেস্কিমাস মোবাইলসহ চার হাজার তিনশ টাকা ও এএসআই শামীমের আড়াই হাজার টাকা খোয়া যায়। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ ও অজ্ঞাত আরও ১১৫জন ব্যক্তিকে আসামি করে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এদিকে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম ছুডু অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। তার নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তার দাবি। এখন গ্রেফতার এড়াতে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ভুক্তভোগী আসামি সাদ্দামের মা হাবিবা বলেন, মনে করেন ইনো (এই) ঘটনার দুই দিন আগেই আমার ছেলেরে আরেক মামলায় পুলিশ ধইরে নিয়ে গেছে। তার পরেও আমার ছেলেরে মিথ্যা ঘটনা দিয়ে আবার আসামি দিছে। যারা এ দুর্ঘটনা গুইল্লা ঘটায়ছে ওগরে বাদ দিয়া আমগর (আমাদের) নাম দিছে।
এ সম্পর্কে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইগাতী থানার এসআই সজীব বলেন, এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে সুজন ও সাইফুল নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টির এখন পর্যন্ত তদন্ত চলছে। তদন্তে যারা দোষী সাবস্ত হবেন তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। আইনের মাধ্যমেই তাদের বিচার হবে। এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, মানুষ যদি পুলিশের ভয়ে দূরে সরে থাকে সেখানে পুলিশের কিছুই করার নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।