দাদার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় মুক্তামনি
জাহিদ হোসাইন:
নিজ দাদার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হল মুক্তামনি। বুধবার জোহরের নামাজের পর ২.১০ মিনিটে স্থানীয় মসজিদে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাদা ইজাহার গাজীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
মুক্তামনির চাচা ওসমান গনি বলেন, মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার, উপজেলা চেয়ারম্যন আসাদুজ্জামান বাবু, সদরের সাবেক ইউ এন ও শাহ আব্দুস সাদিসহ প্রশাসনের বড়বড় কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ দুর দূরান্ত থেকে শত শত লোকজন এক পলক দেখার জন্য ভীড় করে মুক্তামনির বাড়িতে। এ সময় পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে আকাশবাতাস ভারি হয়ে যায়। সকলের চোখে পানি চলে আসে। পরিবারের সদস্যদের সান্ত¦না দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলে সকলেই।
তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর আগে মাজে মাঝে মুক্তামনি দাদার কবর দেখার আগ্র প্রকাশ করতো। তখন পরিবারের সদস্যরা হুইল চেয়ারে করে নিয়ে তাকে দাদার কবর দেখিয়ে নিয়ে আসতো। এ কারনেই তাকে তার দাদার কবরের পাশে শায়িত করা হয়েছে।
বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার কামারবায়সা গ্রামের ১০ বছরের শিশু মুক্তামনি দেড় বছর বয়স হতে রোগের সাথে সংগ্রাম করে বুধবার (২৩ মে) সকাল ৭টা ৫০ মিনিটি মারা যায়।
এর আগে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে খবর প্রকাশ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনায় আসে মুক্তামণির খবর।
গত ২০১৭ সালের ১০ জুলাই তাকে ঢাকায় ভর্তি করার পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সামন্তলাল সেনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম ছয় মাস ধরে তাকে চিকিৎসা দেয়। এ সময় তার দেহে কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়।
চিকিৎসায় তার স্বাস্থ্যের আশানুরুপ উন্নতি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি সরকারি খরচে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
এদিকে ঢাকায় টানা ছয় মাস চিকিৎসা শেষে এক মাসের ছুটিতে মুক্তামণি ২০১৭ এর ২২ ডিসেম্বর বাড়ি ফিরে যায়। এর পর থেকে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলতে থাকে। এরই মধ্যে তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। গত তিন দিন যাবৎ অবস্থা মারাত্মক আকার ধারন করে। ডান হাতের ক্ষতস্থান আবার নতুন করে পচন ধরে। পঁচা স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করে ছোট বড় পোকা।