কলারোয়ার গয়ড়া বাজারে ব্যবসায়ীর দোকানঘরে তালা দিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ
জুলফিকার আলী, কলারোয়া:
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের গয়ড়া বাজারের এক ফার্নিচার ব্যবসায়ীর দোকানঘরে তালা দিয়েছে হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানা কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুরে কলারোয়ার গয়ড়া বাজারের এ ঘটনা ঘটে।
দোকানের মালিক আলহাজ্ব লিয়াকাত আলী বলেন, গয়ড়া বাজারে আমার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সাড়ে ৫ শতক জমি ছিল। ২০০৪ সালে হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সুবিধার্তে ওই জমি থেকে পৌনে ৫ শতক জমি দারুল আতফাল তাহফিজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার নামে দান পত্র করে দেয়। তখন থেকে অবশিষ্ট পৌনে ১ শতক জমিতে একটি দোকান ঘর নির্মাণ করে আমি হাসান কবিরের কাছে ভাড়ায় দিয়েছি। হঠাৎ হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাজান আলী মাদ্রাসায় জমি কম আছে এমন অভিযোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারী সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় আমার বিরুদ্ধে একটি পিটিশন-৩৫০/১৮ মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন আছে। কিন্তু আজ(মঙ্গলবার) দুপুরে মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ গায়ের জোরে আমার ওই দোকানের দরজায় দুটি তালা দিয়ে গেছেন।
এ ব্যাপারে ভাড়াটিয়া হাসান কবির বলেন, লিয়াকাত আলীর কাছ থেকে আমি দোকানঘরটি ২০০৭ সাল থেকে ওই দোকানঘরটি ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছি। গত মাস তিনেক আগে থেকে মাদ্রাসা ও এতিমখানা ম্যানের্জি কমিটির সভাপতি শাহাজান আলী আমার কাছে ভাড়া চাওয়া শুরু করে। আজ সকালে তিনি, আবারও ভাড়া চায়। আমি বলি যে যার কাছ থেকে আমি দোকাঘর ভাড়া নিয়েছিলাম তার কাছে আমি ভাড়ার টাকা দেবো। আপনি তাকে যেয়ে বলেন। এরপর তিনি তার সেক্রেটারি আব্দুর রহিম ও নাসিরউদ্দীন মিলে দোকানে তালা দিয়ে যায়।
আতফাল তাহফিজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানা ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারি আব্দুর রহিম বলেন, আমি কিছু জানিনা। যা কিছু সব সভাপতি জানে। আমি তালা দেয়নি। তালা দিয়েছে সভাপতি।
তবে তালা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আতফাল তাহফিজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাজান আলী বলেন, আমাদের মাদ্রাসার ১ শতক জমি ওর বোনের বিল্ডিং এর ভেতরে চলে গেছে। এছাড়া দলিলে যতটুকু জমি আছে সবই সে মাদ্রাসার নামে লিখে দিয়েছে। আমি তালা দিয়েছি কি দেয়নি সেটা মোবাইলে বলা যাবে না। আপনি মনে করেন আমি তালা দেয়নি তালা দিয়েছে ওই দোকানদার হাসান কবির নিজে।
কলারোয়া থানার এস আই সোলায়মান আক্কাস বলেন, ভাড়ার ব্যাপারে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেই ব্যাপারে আমি দুই পক্ষের কাছে শোনা বোঝা করেছি। আশা করছি দুইপক্ষকে ডেকে দ্রুত একটি সমাধানে পৌছানো যাবে। দোকানে তালা দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোকানে তালা দেওয়া হয়েছে কি না আমি খেয়াল করিনি।
কলারোয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জিয়াউর রহমান বলেন, দোকানঘরে তালা দেওয়ার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Please follow and like us: