সাতক্ষীরায় ফারাজানা ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে প্রসুতি মায়ের মৃত্যু

রঘুনাথ খাঃ ভুল অপারেশনের সাতদিন পর এক প্রসুতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। বৃহষ্পতিবার রাত ৯টা ৫২ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে তার মৃত্যু হয়। তবে ওই মায়ের সদ্যজাত পুত্র সন্তান সুস্থ রয়েছে।মৃত নারীর নাম সানিয়া খাতুন (১৮)। সে যশোর জেলার রাজারহাট থানাধীন আবাদ কচুয়া গ্রামের হাবিবুল্লাহ ইসলাম জয় এর স্ত্রী ও সাতক্ষীরা সদরের ঘোনা গ্রামের তৈয়বুর রহমানের মেয়ে।মৃত সানিয়া খাতুনের নানা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি গ্রামের আব্দুল মজিদ গাইন জানান, সানিয়ার চার বছর বয়সে তার বাবা তৈয়বুর রহমান ভারতে অবৈধপথে গরু আনতে যেয়ে নিখোঁজ হয়। এর পর থেকে মেয়ে জ্যো¯œা খাতুন দেবহাটার পারুলিয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপর থেকে সানিয়া ও তার ছোট ভাই রাকিবুল ইসলাম তার(নানা) কাছে বেড়ে উঠতে থাকে। ২০২২ সালে সানিয়াকে যশোর জেলার রাজারহাট থানাধীন আবাদ কচুয়া গ্রামের হাবিবুল্লাহ ইসলাম জয় এর সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস আগে সন্তান সম্ভবা সানিয়া তার কাছে চলে আসে। একপর্যায়ে ডাঃ শায়লা ফারজানার মাধ্যমে সিজারিয়ানের জন্য সাতক্ষীরা শহরের জজ কোর্টের সামনে ফারজানা ক্লিনিক এÐ হার্ট কেয়ার সেন্টারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হই। গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সানিয়াকে ফারজানা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওইদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে পুত্রসন্তান জন্ম দেয় সানিয়া। এর কিছুক্ষণ পরপরই সানিয়ার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওইদিন রাত ৮টার দিকে সানিয়াকে সদ্যজাত সন্তানসহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যেয়ে তিনি জানতে পারেন যে সিজারিয়ানের সময় সানিয়ার জরায়ুর নাড়ি ও প্র¯্রাবের নাড়ি কেটে ফেলা হয়েছে। সেখানে ছয় ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ২৯ এপ্রিল সোমবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেওয়া হয় দুই ব্যাগ রক্ত। একপর্যায়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২ মে বৃহষ্পতিবার রাত ৯টা ৫২ মিনিটে সানিয়া মারা যায়। তবে সদ্যজাত সন্তান সুস্থ রয়েছে। সানিয়ার লাশ শুক্রবার দুপুর দু’টোয় তার নানার আগরদাঁড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
মজিদ গাইন অভিযোগ করে বলেন, ফারজানা ক্লিনিক এÐ হার্ট কেয়ার সেন্টার কর্তৃপক্ষ তার নাতনিকে ভুল অপারেশনে মেরে ফেলায় তিনি থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার ডাবলু তার ভাই আবু সাঈদকে শুক্রবার সকালে ক্লিনিকে ডেকে আনেন। এবং বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ না করে এক লাখ ২৫ হাজার টাকায় মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। একইসাথে সানিয়ার সন্তানের ভরণপোষণ ও শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুিত দেন। এসব কথা বলার একপর্যায়ে ভাই আবু সাঈদের কাছে এক লাভ ২৫ হাজার টাকার জনতা ব্যাংকের একটি চেক দিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে ফারজানা কিèনিক এন্ড হার্ট কেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার ডাবলুর সঙ্গেতার ০১৭১২৩০৬৮০৭ নম্বর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)