কালিগঞ্জে যুবলীগ নেতা সাইফুলের নেতৃত্বে সংখ্যালঘুর মাছের ঘের জবরদখলের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার :
কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে এক সংখ্যালঘুর মাছের ঘের জবরদখলপূর্বক তছনছের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোরে উপজেলার তারালী ইউনিয়নের আমিয়ান গ্রামে। এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী অরবিন্দু ঘোষ (৪২) কালিগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
সরেজমিন ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আমিয়ান গ্রামের মৃত সূর্য্যকান্ত ঘোষের ছেলে অরবিন্দু ঘোষ (৪২) ও তার সহোদর ভাই দীনবন্ধু ঘোষ (৫৫) আমিয়ান মৌজায় এসএ ৩৩৮ নং খতিয়ানে ১৫৫ দাগে ৩ বন্দের মধ্যে সাড়ে ৭৩ শতক এবং ডিপি-১৯৬ নং খতিয়ানে ৭৯২ দাগে ৬৫ শতক, ৭৯৩ দাগে ১২ শতক, ৮৩৪ দাগে ৬৪ শতক, ৮০৯ দাগে ২৪ শতকসহ অন্যান্য দাগে লীজ নেয়া ১২ বিঘাসহ মোট ১৭ বিঘা নিজস্ব ও লীজকৃত জমিতে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত শান্তিপূর্ণ ভাবে মাছের ঘের করছেন। এর ধারাবাহিকতায় ২ মাস পূর্বে তারা পানি উত্তোলন পূর্বক মাছ চাষ শুরু করেন। সম্প্রতি ওই ঘেরের মধ্যখানে কয়েকজন ব্যক্তির নিকট থেকে ১ একর ৪১ শতক জমি উপজেলার কাঁকশিয়ালী গ্রামের মৃত জাঁকির হোসেন খন্দকারের ছেলে ও তারালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন খন্দকার (৩২) ডিড নিয়ে মাছ চাষকৃত ঘেরের অংশবিশেষ জোরপূর্বক দখল নেয়ার পায়তারা শুরু করে। শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশংকায় বিষয়টি কয়েকদিন পূর্বে থানার অফিসার ইনচার্জকে লিখিত ভাবে অবগত করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ০২/০১/১৮ তারিখে থানায় অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠক থেকে শালিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেকেন্ড অফিসার লিয়াকত হোসেন চলতি বছর যেহেতু ২মাস পূর্বে মাছ চাষ শুরু হয়েছে সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবছর উক্ত ১ একর ৪১ শতক জমির হারির টাকা মিলন খন্দকারকে দেয়ার সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। এজন্য অরবিন্দু ঘোষকে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়। তবে শালিস বৈঠক চলাকালে মিলন খন্দকারের নিকট তার গৃহীত ডিড এর কপি দেখতে চাইলেও তিনি দেখাতে পারেন নি। পরদিন ০৩/০১/১৮ তারিখে থানার অফিসার ইনচার্জ মহোদয় অরবিন্দু ঘোষকে থানায় ডেকে নিয়ে উক্ত জমির মধ্য থেকে ৬ বিঘা ছেড়ে দিতে বলেন এবং মিলন খন্দকারকে ওই জমি ভেড়ীবাধ দিয়ে দখলে নিতে বলেন। এরপর ০৬/০১/১৮ তারিখ শনিবার ভোরে অনিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তারালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন খন্দকার ও পূর্বনলতা গ্রামের জিএম আনছার আলীর ছেলে জি,এম সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক ভাড়া করা সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অরবিন্দু ঘোষ ও দীনবন্ধু ঘোষের পৈত্রিক, এওয়াজ ও লীজকৃত মোট সাড়ে ৫ একরের মধ্য থেকে আড়াই একর জমি জোরপূর্বক দখলে নেয়। এসময় তারা ঘের তছনছ করে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিসাধন করে। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা দেয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী অসিত সেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে মিলন অল্প জমি ডিড নিয়ে ১৭ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়েছে ।
এব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে মিলন ডিড থাকা সত্বেও ঘেরের দখল পাচ্ছিলেন না । শালিসের মাধ্যমে ঘেরের দখল নিয়েছেন ।
ঘটনার বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুবীর দত্ত জানান, মোট সম্পত্তি বিশ বিঘা এই সম্পত্তির কিছু অংশের ডিড শেষ হয়ে গেছে । মিলন খন্দকার স্বপন সহ আট জন মালিকের কাছ থেকে চার বিঘা জমি নতুন করে ডিড দিয়েছে । সেই আনুযায়ী মিলন খন্দকার জমি ভোগ করছে । জবর দখল এর বিষয় টি আমার জানা নেই ।
Please follow and like us: