চীনা মধ্যস্থতায় শুরু হচ্ছে হামাস-ফাতাহ ঐক্য আলোচনা

আন্তজার্তিক ডেস্ক:ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফাতাহের প্রতিনিধিরা বেইজিংয়ে এক ঐক্য সংলাপে বসতে যাচ্ছেন। শিগগিরই এই সংলাপ শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেছেন হামাস ও ফাতাহর নেতৃবৃন্দ এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। হামাস ও ফাতাহের মধ্যে এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। মূলত ফাতাহের একপ্রকার বিরোধিতা থেকেই হামাসের জন্ম। হামাস শুরুর দিকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে না নিলেও ইদানীং দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। চীনের তরফ থেকে ফিলিস্তিনের দুই বিবদমান পক্ষের মধ্যে ঐক্যের এই আলোচনা একটি বিরল পদক্ষেপ। ফাতাহ পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি রাজনৈতিক দল। এই দল ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সীমিত স্বশাসনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিপরীতে হামাস পশ্চিমা বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। এর আগে, ২০০৭ সালে এক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে হামাস গাজা থেকে ফাতাহকে বিতাড়িত করে। এর পর থেকেই দল দুটি রাজনৈতিক বিরোধ সারতে ব্যর্থ হয়েছে। ওয়াশিংটন এ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্যের পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ফাতাহ তথা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সমর্থন করলেও হামাসকে সন্ত্রাসী হিসেবে নিষিদ্ধ করেছে।
ফাতাহের এক নেতা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, জ্যেষ্ঠ নেতা আজাম আল-আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চীনে রওনা হয়েছে। হামাসের এক নেতা বলেছেন, হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুকের নেতৃত্বে আলোচনায় যোগ দেবে। তবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত না করে বলেছেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্বকে শক্তিশালী করার বিষয়টি সমর্থন করি এবং আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে (হামাস ও ফাতাহের মধ্যে) ঐক্য অর্জন এবং সংহতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সব ফিলিস্তিনি উপদলকে সমর্থন করি।গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম হামাসের কোনো প্রতিনিধি চীনে গেল। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনা কূটনীতিক ওয়াং কেজিয়ান গত মাসে কাতারে হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বেইজিংয়ের এই কূটনীতিকের উদ্দেশ্য দুই ফিলিস্তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর মধ্যে পুনর্মিলনের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেয়া।
চীন সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান হারেই কূটনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে যাচ্ছে। আরব দেশ ও ইরানের সঙ্গে দেশটি শক্তিশালী সম্পর্ক উপভোগ করছে। গত বছর, বেইজিং দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে একটি যুগান্তকারী শান্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে। চীনা কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ব্যাপক কথা বলছে। দেশটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি শান্তি সম্মেলন এবং একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার আহ্বান জানিয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)