শ্যামনগরে গ্রেফতারকালে পুলিশের উপর হামলা;হুমায়ুনকে গ্রেফতার

শ্যামনগর উপজেলার ৬নং রমজানগর ইউনিয়নের যুদ্ধোবিরোধী রোকন আবুল হোসেনের পুত্র শিবির ক্যাডার, নাশকতা সৃষ্টিকারী রীট হুমায়ুন। সাতক্ষীরা আগরদাঁড়ি মাদ্রাসা ছাত্র হিসাবে লেখাপড়া কালীন সময়ে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমান সে দলীয় প্রভাবের ফলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নিজেকে রক্ষা করে আসছে। এলাকার একজন চিহ্নিত মামলাবাজ, ভূমিদস্যু, নাশকতা মামলা সহ ডজন মামলার আসামী রিট হুমায়ুন কথায় কথায় মামলা করে। প্রশাসন কথা না শুনলে তার নামে হাইকোর্টে রিট করে। পরে মিমাংশা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। রিট হুমায়ুন আগরদাঁড়ি মাদ্রাসায় ছাত্র শিবিরের দেশদ্রোহী মিটিং করায় একটি মামলা হয় যার ৩৪ নং আসামী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, ধর্ষণ, সংখ্যালঘুদের জমি দখল, বনবিভাগের গাছ কর্তন, খাদ্য গুদামের দারোয়ানের উপর হামলা, খাদ্য গুদামের জায়গা দখল, ৬নং রমজাননগর ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আলমগীর হায়দারে বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায়, তৎকালীন চেয়ারম্যান আলমগীর হায়দার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা  সহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে।
মামলার বিবারণী সমূহ, মামলার কারন :-চাঁদাবাজী ও চুরি, মামলা নং-জিআরপি-১৮৯/০৫, তারিখ-১৩/০২/২০০০ ইং, বাদী-মো: আবুল কালাম মঞ্জু, পিং-মৃত আবুল কাশেম, সাং-মানিকখালী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-মারপিট ও চুরি, মামলা নং-জিআর-৯৫/০৬, তারিখ-১৩/০৫/২০০৬ ইং, বাদী-আবুল কালাম সামছুদ্দীন, পিং-মৃত আবুল কাশেম গাজী, সাং-মানিকখালী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-চাঁদাবাজী, মামলা নং-২৬/২৬৯, তারিখ-৩১/০৮/২০০৭ ইং, বাদী-মো: আব্দুস সামাদ মোল্ল্যা, পিং-নাসির উদ্দীন, সাং-সোরা, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও উচ্ছেদ, মামলা নং-২৩/২৮৬, তারিখ-১৩/০৫/২০০৮ ইং, বাদী-অমল কৃẲ মন্ডল, পিং-নগেন্দ্রনাথ মন্ডল, সাং-মানিকখালী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :- সংখ্যালঘু নির্যাতন, মামলা নং-২৫/১৬২, তারিখ-২৮/০৬/২০০৮ ইং, বাদী-তুলশী দস কর্মকার(সাংবাদিক, দৈনিক কাফেলা ও অনির্বান) পত্রিকার, পিং-মৃত কার্তিক চন্দ্র কর্মকার, সাং-বাদঘাটা, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :- বসত ভিটা এবং জমি দখল, মামলা নং-০৫/৯২, তারিখ-০৩/০৬/২০০৯ ইং, বাদী-মজিবর রহমান, পিং-মৃত নুহেল উদ্দীন গাজী, সাং-মানিকখালী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :- বন বিভাগের সরকারী গাছ কর্তন, মামলা নং-১৫/১২৫, তারিখ-১৯/০৫/২০০৯ ইং, বাদী-গোলাম মোস্তফা, পিং-হাজী ময়নুদ্দীন আহম্মেদ, সাং-সোরা, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :- চাঁদাবাজী ও ভূমিদখল, মামলা নং-৩০/৩৮৬, তারিখ-৩০/১২/২০০৯ ইং, বাদী-মো: ফজলুল হক, পিং-আলহাজ¦ মো: আরশাদ আলী গাজী, সাং-পলাশপোল, থানা+জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :- ধর্ষণ, মামলা নং-০৩/৬৭, তারিখ-০৪/০৩/২০১০ ইং, বাদী-মোছা: শাবানা খাতুন, পিং-মো: আব্দুল মজিদ, সাং-টেংরাখালী, থানা শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-ইসলামী ছাত্র শিবিরের সরকার বিরোধী গোপন বৈঠক, মামলা নং-৩৫/১০৯, তারিখ-১৫/০২/২০১০ ইং, বাদী-এস.আই. আসাদুল ইসলাম, পিং-মৃত কার্তিক চন্দ্র কর্মকার, সাতক্ষীরা-থানা, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-নাশকতা, মামলা নং-০৩/১২৭, তারিখ-০১/০৩/২০১৩ ইং, বাদী-মো: হাবিবুর রজমান ওরফে ছোট খোকন, পিং-মৃত নাসের সরদার, পূর্বপাড়া সিটি কলেজের পাশের্^, থানা ও জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-সরকারী খাদ্য গুদামের জমি দখল করতে কর্মরত দারোয়ানদের মারধর, মামলা নং-জিআর-৩৬৭, তারিখ-১৯/১১/২০১৪ ইং, বাদী-খাদ্য বিভাগ, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-ভেটখালী সরকারী খাদ্য গুদামের জমিতে জোর পূর্বক, পাঁকা দোকান ঘর নির্মানের চেষ্টা, মামলা নং-পি-৮৮০/১৯, তারিখ-১১/০৭/২০১৯ ইং, বাদী-খাদ্য বিভাগের পক্ষে, এস.এম. আমিনুর রহমান বুলবুল,ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ভেটখালী খাদ্য গুদাম, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-সাইবার অপরাধ, পিটিশন মামলা নং-৪৫৭/২০১৯, তারিখ-২৮/১১/২০১৯ ইং, বাদী- এস.এম. আমিনুর রহমান বুলবুল, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, নকিপুর খাদ্যগুদাম, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-ঘের দখল এবং খুন করার চেষ্টা, মামলা নং-১৮/৪৫, তারিখ-১৩/০২/২০১৯ ইং, বাদী-জিএম, নূরুল ইসলাম, পিং-মৃত মাছিম গাজী, সাং-সোরা, পো:-ভেটখালী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন :-দোকান লুট ও খুন করার চেষ্টা, মামলা নং-০৫/২০২০, তারিখ-০৫/০৫/২০২০ ইং, বাদী-জি.এম. আল-মামুন, পিং-মৃত জিএম আবুল কাশেম, সাং-ভেটখালী, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন : বেআইনী ভাবে বাড়ীতে প্রবেশ করে মারপিট, চুরি, ছিনতাই, শিলতাহানী, মামলা নং-২২/২০২০, তারিখ-০৮/০৪/২০২০ ইং, বাদী-হালিমা বেগম, জং-আনছার আলী, সাং-সোরা, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা। মামলার কারন : সাইবার অপরাধ, মামলা নং-৩২/২০২০, তারিখ-০৫/০৫/২০২০ ইং, বাদী-এসআই আ: রাজ্জাক, শ্যামনগর থানা, সাতক্ষীরা।
গত ২ই জুন ২০২০ তারিখে শ্যামনগরের ডজন-ডজন মামলার আসামী হুমায়ুন কবীর পুলিশের হাতে আটক হয়। আসামী গ্রেফতারকালে হুমায়ুনের ভাইয়ের নেতৃত্বে পুলিশের উপর হামলা করা হলে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তার  নামে চলমান ৫টা মামলার মধ্যে ৩টি মামলা পেন্ডিং এবং ২টি মামলা আসামী হওয়ায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্যামনগর থানা পুলিশের এসআই আনুউদ্দীন, এসআই আব্দুর রাজ্জাক, এসআই নূর কামাল, এএসআই বিল্লাল হোসেন ও একজন কনেষ্টেবল হুমায়ুনের বাড়ীতে পৌছালে, পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে হুমায়ুন তার বাড়ীর ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পালানোর সময়ে পায়ে হালকা জখম হয়। ঐ সময়ে পুলিশ হুমায়ুনকে গ্রেফতার করে। ৬জন পুলিশ সদস্য হুমায়ুনের বাড়ীতে গিয়ে গ্রেফতারকালে হুমায়ুনের ছোট ভাই হায়দার এর নেতৃত্বে তার পিতা, মাতা, স্ত্রী সহ তার নিকটাত্মীয় ও প্রতিবেশীরা পুলিশের উপর হামলা করে। হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ সদস্য সাময়িক চিকিৎসা নিয়েছে এবং এসআই আ: রাজ্জাক গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হুমায়ুনকে গ্রেফতার করে শ্যামনগর থানা পুলিশ জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।
এলাকাবাসীরা জানান, হুমায়ুন শ্যামনগর থানা অফিসার ইনচার্জ, শ্যামনগর উপজেলা সাবেক নির্বাহী অফিসার, সাবেক চেয়ারম্যান আকবার আলী, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মামুন, জেলা অতিরিক্ত ম্যাজেষ্ট্র (এডিম), সাতক্ষীরা , শ্যামনগর থানার এস আই রাজ্জাক, শ্যামনগর থানার এস আই মোস্তফা, শ্যামনগর খাদ্য গুদামের অফিসার ইনচার্জ আমিনুর রহমান, শ্যামনগর থানার সাবেক তদন্ত ওসি, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরার সম্পাদক, শ্যামনগর প্্েরস ক্লাবের সভাপতি সহ অসংখ্য ব্যক্তির নামে মিথ্যা রীট মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করে থাকেন। হলুদ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার জন্য ঢাকা থেকে প্রকাশিত নিবন্ধন বিহীন অনলাইন “নয়াডাক” পত্রিকার সম্পাদক পরিচয় দিয়ে আসছে। শুধুমাত্র শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের বিভিন্ন মামলার আসামীদের কাছে কার্ড বিক্রি করে সাংবাদিকের প্রশিক্ষণ দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। এমনকি বিভিন্ন উৎসৃঙ্খল ব্যক্তিদের মাঝে কার্ড প্রদান করে দলে ভারি করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে থাকে।  রিট হুমায়ুন অনলাইন পত্রিকার সম্পাদকের পরিচয় দিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। এমনকি এলাকায় অনলাইন পত্রিকার কার্ড বিক্রি করে লাখ টাকা হাতিয়েও নিচ্ছে।
তবে হুমায়ুনকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর এলাকার মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। হুমায়ুনকে গ্রেফতার করা কালে পুলিশের কাজে বাধাঁসৃষ্টি ও হামলার ঘটনায় শ্যামনগর থানায় কেন মামলা হয়নি? এই নিয়ে মানুষের মাঝে বিভিন্ন মন্তব্যের শেষ নেই। পুলিশের উপর হামলা হলে সাধারণ মানুষ কিভাবে নিরাপত্তা পাবে ?
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)