কেশবপুর সাগরদাঁড়ীতে মধুমেলা শুরু আজ

যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়ীতে আজ ২২ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের ১৯৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে মধুমেলা ২০২০।

বিকালে মধুমেলার উদ্বোধন করবেন সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমনটাই জানিয়েছে কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন। মধুমেলাকে সামনে রেখে বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের জনক মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের জন্ম স্থান মধুপল্লীর প্রতিটি জায়গাকে পর্যাটকদের জন্য আকর্ষণীয় মোহনীয় করে তুলেছেন আয়োজক কমিটি। মধুভক্তদের জন্য এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত সাগরদাড়ী। ২২ জানুয়ারি হতে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সাতদিন মধুপ্রেমীদের নিরাপত্তায় মেলা জুড়ে থাকবে আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি। সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশের ভ্রাম্যমান টহল টিম। যারা আইনশৃংখলা পরিস্থিতিকে সর্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবেন। মেলার মাঠের প্রতিটি স্পট থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায়। এছাড়াও দর্শণার্থীদের জন্য মেলা জুড়ে ৩৭টি স্পটে থাকবে আইনশৃংখলা বাহিনীর বাড়তি নিরাপত্তা। যা গত বারের চেয়ে ২টি অতিরিক্ত স্পটে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ র‌্যাব আনসারসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর চার স্তরের নিরাপত্তা বলায়ে বেষ্টিত এবারের মধু মেলায় থাকবে সার্কাস, যাদুপ্রদর্শনী কৌতুক, মৃত্যুকুপ, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন প্রসাধনী পণ্যের স্টল। এছাড়া ৭দিনব্যাপী মধুমেলার মধুমঞ্চে প্রতিদিন থাকবে নাটক, যাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মধুমেলার সার্বিক আইনশৃংখলা বিষয়ে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ আবু সাঈদ বলেন, মেলা প্রাঙ্গণে যাতে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য সাগরদাঁড়ীকে চার স্তরের নিরাপত্তা চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হবে। কেউ বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তার শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। অপরাধী যেই হোক কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, মধুমেলাকে পর্যটকদের জন্য নির্বিগ্ন করতে ও অশ্লীল মুক্ত রাখতে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে এবং আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমান আইনশৃংখলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

১৮২৪খ্রীষ্টাব্দে ২৫ জানুয়রি মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত যশোর জেলার কেশবপুরের কপোতাক্ষ তীরে সাগরদাঁড়ী গ্রামে বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা জমিদার ও আইনজীবি রাজনারায়ণ দত্ত, মাতা জাহ্নবী দেবী। মধুসূদন শৈশবে শিক্ষক হরলাল রায় ও সাগরদাঁড়ী শেখপুরা গ্রামের মৌলভী খন্দকার মখমল আহম্মেদের কাছে বাংলা ও ফারসি শিক্ষা লাভ করেন। সগরদাড়ীতে শৈশব কটিয়ে তিনি তার জন্মের ১০ বছর পর কলকাতার খিদিরপুরে চলে যান সেখানে বিভিন্ন ভাষায় জ্ঞানার্জন করেন। ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আবার তার জন্ম ভূমি সাগরদাড়ীতে ফিরে আসেন। এরই মধ্যে তিনি মহাকাব্য মেঘনাথ বধ, ব্রজঙ্গনা, বীরঙ্গনা ও তিলোতমা সম্ভব রচনা করেন। তিনি ১৮৭৩ খ্রীষ্টাব্দে ২৯ জুন কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)