সাতক্ষীরার কলারোয়ায় লক্ষ্মীপূজা অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় লক্ষ্মীপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৩ অক্টোবর) সনাতন ধর্মালম্বিদের ঘরে ঘরে পালিত হচ্ছে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা। দুর্গোৎসবের পরপরই প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয় এ পূজা। কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিজেদের বসতবাড়িতে লক্ষ্মী পূজা করেছে।

শাস্ত্রমতে- দেবী লক্ষ্মী ধন-সম্পদ তথা ঐশ্বর্যের প্রতীক। এছাড়া উন্নতি (আধ্যাত্মিক ও পার্থিব) আলো, জ্ঞান, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের দেবীও তিনি। তিনি খ্যাতি, জ্ঞান, সাহস ও শক্তি, জয়, সুসন্তান, বীরত্ব, স্বর্ণ, অন্যান্য রতরাজি, শস্য, সুখ, বুদ্ধি, সৌন্দর্য, উচ্চাশা, উচ্চভাবনা, নৈতিকতা, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন দান করেন। এক কথায় লক্ষ্মীপূজায় মানুষ সার্বিকভাবে সুন্দর ও চরিত্রবান হয়। দেবী লক্ষ্মী দ্বিভূজা। তিনি বিষ্ণুর পতœী, ছয়টি বিশেষ গুণের দেবী। তার অপর নাম মহালক্ষ্মী। বাহন পেঁচা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস-পূর্ণিমা রাতে ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে প্রশ্ন করেন ‘কে জেগে আছো? তাই লক্ষ্মী পূজা ভক্তদের কাছে কোজাগরী পূজা নামেও পরিচিত। কোজাগরি অর্থ ‘কে জেগে আছো। রাত জেগে থাকা মানুষেরাই দেবীর ধন লাভের অধিকারী হন বলে ব্রতকারীরা সারারাত জেগে থাকবেন দেবীর ডাকের প্রতীক্ষায়। এদিন ভক্তকূলকে ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে বাড়িতে বাড়িতে পূজা গ্রহণ করে লক্ষী। সে সন্তুষ্ট থাকলে সংসারে অর্থকষ্ট থাকবে না, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে। কোজাগরী লক্ষীপূজার মধ্য দিয়েই দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার বিদায়ের শোক ভুলে আবার আনন্দে মেতে উঠবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন মঠ, মন্দির আর হিন্দু পরিবারের প্রতিটি ঘরে আজ অনুষ্ঠিত হবে লক্ষ্মীপূজা। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এ পূজা উদযাপন করে। এ পূজায় প্রয়োজন হয় ধানের শীষ, কাঁচা সুপারি, কলাপাতা, কলা গাছের খোল, আল্পনাসহ আরও নানা সামগ্রী। মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সঙ্গে গৃহস্থের আঙ্গিনায় আজ শোভা পাবে চালের গুড়োর আল্পনায় মা লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ। এ পা এঁকে রাখা হবে সব বাড়ির প্রবেশপথে। পুণ্যার্থীরা প্রার্থনা করবে, এসো মা লক্ষ্মী, বসো ঘরে, আমারই ঘরে থাকো আলো করে। ধনসম্পদের আশায় হিন্দু নারী ও পুরুষ পালন করবে উপবাস ব্রত। ফুল, ফল, মিষ্টি, নৈবেদ্য দিয়ে আরাধনা করবে মায়েরা। পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও অতিথি আপ্যায়ন করা হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)