রমজাননগরের কাসেম ও ফজলু বাহিনীর কবল থেকে মুক্তি চান সাহিদা বেগম ও তার পরিবার

স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে সতীনপুত্র আবুল কাশেম সরদার তাদেরকে উচ্ছেদের জন্য জমিজমা ও ভিটেবাড়ির সীমানা নিয়ে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এরই জেরে আমার দুই ছেলে ইউসুফ, আইয়ুব সরদার ও পুত্রবধু সাবিনা সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় ইউসুফ ও আইয়ুব বাদে অন্যরা জামিন পাওয়ার পর থেকে আবুল কাশেম ও ফজলু বাহিনী তাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এ নিয়ে তারা আতংকের মধ্যে রয়েছেন।

সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা বলেন শ্যামনগর উপজেলার সোরা গ্রামের ইসমাইল সরদারের দ্বিতীয় স্ত্রী সাহিদা বেগম। তিনি জানান তার দুই ছেলে ইউসুফ ও আইয়ুবকে তার স্বামী রমজাননগর মৌজার ৬৯, ৮৪ এবং ২৩৬ নম্বর খতিয়ান থেকে ৯০ শতক জমি ১৯৯৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ৩৯৬৪ নম্বর রেজিস্ট্রি দানপত্র মূলে হস্তান্তর করেন। এই জমিতে তারা সবাই দখলে রয়েছেন। সাহিদা বেগম বলেন তার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর ছেলে আবুল কাশেম জামায়াতের মাসিক চাঁদাদাতা এবং তার ছেলে জামায়াত নেতা ফজলুল করিম সরদার নারী নির্যাতন মামলার আসামী। আবুল কাশেমের নাশকতা ও বোমা মামলায় এবং একটি জিআর মামলার চার্জশীট হয়েছে। তিনি জানান তার ছেলে ইউসুফের স্ত্রী সাবিনা খাতুন সহ কয়েকজনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে তার ছেলে আইউব আলি সরদার আবুল কাসেম তার ছেলে ফজলুল করিম সহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১২১/২০১৫ মামলা করেন। এ মামলার চার্জশীট হয়েছে। এই মামলা থেকে বাঁচার জন্য আবুল কাসেম তার নিজের পাঁচিল ভাঙ্গা ও ডাকাতির মিথ্যা মামলা করে এবং সাক্ষী বানায় বাড়ি থেকে দুরে সোবহান ও মোস্তফাকে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দোষী কে বা কারা তা নির্ণয় করতে পারেনি। পরে থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করা হয়।

কাশেম সরদার পুলিশ সুপারের কাছে দরখাস্ত করলে শ্যামনগর থানার এসআই রাজকিশোর পাল তদন্ত শেষে দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, সেখানে ডাকাতির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই দুটি রিপোর্টে জনৈক হুমায়ুন কবিরের নাম এসেছে। তিনি রীট হুমায়ুন নামে পরিচিত। রীট হুমায়ুন ৯১৯৬/২০১৪ নম্বর রীট করে ভেটখালি সরকারি গোডাউনের জায়গা দখল করেছেন এবং কয়েকটি দোকান তৈরী করেছেন। বহু মামলার আসামী রীট হুমায়ুনের সহযোগিতায় আবুল কাশেমের ছেলে ফজলুল করিম মিথ্যা ঘটনা সম্পর্কে হাইকোর্টে ২৪৯০/২০১৯ নম্বর রীট দাখিল করে কোন রুল পাননি। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট হয়। এতে শ্যামনগর থানার ওসি ভীত হয়ে সাহিদা খাতুনের দুই ছেলে সহ টিআর ৮৪/১৬ নম্বর মামলার সাক্ষীদের বিরুদ্ধে গত ২ এপ্রিল পেনাল কোডে ৩৯৫/৩৯৭ ধারার মামলা করেন। এ ব্যাপারে পুলিশ জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলে রীটকারী ফজলুল করিম রীট হুমায়ুনের পরামর্শে গত ৭ এপ্রিল তাদের রীট প্রত্যাহার করে নেন। সাহিদা খাতুন আরও বলেন এসব বিষয় উল্লেখ করে গত ৮ এপ্রিল সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের নিকট তিনি আবেদন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তদন্তের কোন রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ২ এপ্রিল তারিখে ৩ নম্বর মামলার ১ নম্বর আসামী ইউসুফ সরদার ও ২ নম্বর আসামী আইয়ুব সরদার কথিত ঘটনার ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে বাড়িতে ছিল না। পাঁচিল ভাঙা কিংবা মিথ্যা ডাকাতির সঙ্গে তারা জড়িত নয়। টিআর মামলার সাক্ষীদের ওই মামলার আসামী করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি পরপর দুইবার তদন্ত করে ডাকাতির ঘটনা মিথ্যা বলে রিপোর্ট দিয়েছে। এমনকি রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন মেম্বর প্রত্যয়নপত্র প্রদান করে বলেছেন, কথিত ঘটনার তারিখে ৩৯৫/৩৯৭ ধারার কোন ঘটনা ঘটেনি। সাহিদা খাতুন তার সন্তানদের নামে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একই সাথে নাশকতা ও বোমা মামলার ফেরারি আসামী আবুল কাশেম ও তার ছেলে ফজলুল করিমের মিথ্যা মামলাটি তদন্ত করে ইউসুফ সরদার, আইয়ুব সরদার ও পুত্রবধূ সাবিনা খাতুনের অব্যাহতি দাবি করেছেন। তারা রীট হুমায়ুনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাহিদার সতীনপুত্র মোঃ নাজির সরদার ও পুত্রবধূ সাবিনা খাতুন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)