কোস্টগার্ডকে ধরিয়ে দেওয়ার অপরাধে নিরিহ ৩ জেলে সন্ত্রাসীদের রোষানলে

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট :

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে বিষ দেয়া মাছ কোস্টগার্ডকে ধরিয়ে দেওয়ার অপরাধে বিষ সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়েছেন শরণখোলার নিরিহ তিন জেলে। উল্টো চাঁদাবাজি মামলা দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একসময়রে কুখ্যাত বনদস্যু এবং সুন্দরবনের বর্তমান সময়ের ডাকাত ও বিষ সন্ত্রাসীদের গডফাদার রুস্তম আলী বয়াতী (৫৮) নিরিহ জেলেদের হয়রানীর নেপথ্যে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। এঘটনায় বিষ পার্টির মহাজন মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলইবুনিয়া গ্রামের কেএম জাহঙ্গীর হোসেন বাদি হয়ে ১৩মে রাতে শরণখোলা থানায় ওই জেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাটি দায়ের করেন।
জেলেদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের নুর ইসলাম আকনের ছেলে ইউসুফ আকন (৪৫), মানিক আকনের ছেলে সোহেল আকন (২০) ও আ. আজিজ খানের ছেলে নাছির খান (২৫) গত ১১ মে বিকেল ৪টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের কেঁচুয়ার খালে মাছ ধরছিলেন। এসময় তারা ওই খালে একদল জেলেকে বিষ দিয়ে মাছ ধরতে দেখে সুপতি স্টেশনের কোস্টগার্ডকে জানান। পরে কোস্টগার্ড সদস্যরা এসে একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারসহ বিষ দিয়ে ধরা ৮০ কেজি চিংড়ি মাছ, ৭ বোতল রিফকড কীটনাশক জব্দ করেন। এসময় ট্রলারে থাকা বিষ পার্টির তিন সদস্য দিপক, নজরুল ও হাচান নদীতে লাফিয়ে পড়ে বনে পালিয়ে যায়। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগী জেলেদের অভিযোগ, সাবেক বনদস্যু, বর্তমানে বনদস্যু ও বিষ পার্টির গডফাদার শরণখোলার বনসংলগ্ন জলেরঘাট গ্রামের মৃত চাঁন বয়াতীর ছেলে মো. রুস্তম আলী বয়াতী নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন। তিনি ওই জেলেদেরকে বিভিন্নভাবে দেখে নেওয়ারও হুমকি দিচ্ছেন।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলে ইউসুফ, সোহেল ও নাছিরের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ওইদনি অভিযান চালিয়ে কীটনাশক ও বিষ দিয়ে ধরা চিংড়িসহ একটি ট্রলার জব্দ করা হয়। তবে বিষ পার্টির সদস্যরা বনে পালিয়ে যাওয়া তদের আটক করা যায়নি। এব্যাপারে একটি ইউডি মামলা দিয়ে জব্দকৃত আলামত বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে, এব্যাপারে মামলার বাদি কেএম জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে বার বার কল করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম জানান, জেলেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নিরিহ জেলেরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে দেখা হবে। ঘটনাস্থলে কোস্টগার্ডের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য পাঠিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)