নকশা পরিবর্তন করে উপকূলীয় বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জলবায়ু পরিষদের

শহর প্রতিনিধি:

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকির মুখে থাকা সাতক্ষীরার উপকূলীয় বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে জলবায়ু পরিষদ। একই সাথে বাঁধের সাবেক নকশা পরিবর্তন করে  আর এল ৪ দশমিক ২০ এর স্থলে ৫ দশমিক ২৭ করারও দাবি জানিয়েছে পরিষদ। তারা বলেন বাঁধ নির্মাণ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি তুলে ধরেন পরিষদ কর্মকর্তারা। তারা বলেন সাতক্ষীরার  শ্যামনগর উপজেলায় উপকূলীয় বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। ২০০৯ সালের আইলার আঘাতে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাঁধ যে কোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে গিয়ে প্লাবিত করতে পারে বিস্তীর্ণ জনপদ। তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় প্রায়ই আঘাত করে। এসব দুর্যোগে সাগর হয়ে ওঠে উত্তাল। জোয়ারের পানি বেড়ে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রধান রক্ষাকবচ উপকূলীয়  বাঁধ নাজুক অবস্থায় থাকায় সম্পদ ও জীবন রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ কর্মকর্তারা আরও জানান, উপকূলীয় বাঁধের ৫ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ঘোলা, বিড়ালাক্ষী, কুপট, পূর্বদূর্গাবাটী, ভামিয়া, নীলডুমুর, দাঁতিনাখালি, কালিকাপুর, হরিনগর, সিংহরতলী, চুনকুড়ি, জ্যোতিন্দ্রনগর, পারশেখালি, টেংরাখালী ও কৈখালি গ্রাম মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ১৫ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ডুমুরিয়া, চকবারা, জেলেখালি, লেবুবুনিয়া, পারশেমারি, নাপিতখালি, চাদনীমুখা, গাবুরা গ্রাম এর বাঁধ যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে। একই অবস্থায় রয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের সবগুলি গ্রাম। সেখানকার বাঁধ মারাত্মত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

কর্মকর্তারা বলেন, দুর্যোগকালে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ প্রথমেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বরদের সহযোগিতা চায়। কিন্তু তাদের হাতে যথেষ্ট অর্থ না থাকায় সমস্যার সমাধান করতে হিমশিম খেতে হয়। এমন অবস্থায় উপকূলীয় বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণকারী পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘বরাদ্দ নেই’ এই অজুহাত  দিয়ে বাঁধ নির্মাণ থেকে বিরত থাকে। ফলে জনগণের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এমন অবস্থায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মাণ সংস্কারের সাথে যুক্ত করা গেলে জনগণের ভোগান্তির  লাঘব হতে পারে। এসব বিষয় সামনে রেখে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের হাতে বাঁধ নির্মাণ সংস্কারের বরাদ্দ দেওয়ারও দাবি জানান। আপৎকালীন এবং স্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে ইউনিয়ন পরিষদকে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে জলবায়ু পরিষদ কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত নির্মাণ সংস্কার, এর সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সম্পৃক্ত করা এবং বাঁধের পূর্বতন নকশা পরিবর্তন করে তা ৫ দশমিক ২৭ মিটারে উন্নীত করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জলবায়ু পরিষদ সভাপতি সাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনার রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নূরুল ইসলাম, মহিলা সংস্থার সভাপতি শাহানা হামিদ প্রমুখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)