কলারোয়ায় এলজিইডি’র ক্ষেত্রপাড়া উপ-প্রকল্প হস্তান্তর
কলারোয়ায় এলজিইডি কর্তৃক অংশগ্রহণমূলক ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ সেক্টর প্রকল্পের আওতায় ক্ষেত্রপাড়া উপ-প্রকল্পের হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১ টায় কলারোয়া অডিটোরিয়ামে এ প্রকল্পের ব্যবহারিক হস্তান্তর প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষেত্রপাড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ কুমার কুন্ডু, কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর এম সেলিম শহনেওয়াজ, উপজেলা প্রকৌশলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কলারোয়ার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নওশের আলী, ক্ষেত্রপাড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির (পাবসস) সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্ষেত্রপাড়া পাবসস’র সভাপতি জয়দেব কুমার সাহা। এ সময় অনুষ্ঠানে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, নির্বাহী সদস্যসহ সাধারণ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের সাধরণ সভায় উপ-প্রকল্পটি সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিলো, এলাকার ফসল আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা, জলাবদ্ধতা দূর করা ও শুষ্ক মৌসুমে ভ‚-গর্ভস্থ ও খালের প্রাকৃতিক পানি দিয়ে ফসল উৎপাদন করা। প্রকল্পটি ২০১২ সালের ৩ মার্চ উপজেলা সমন্বয় সভায় অনুমোদন করা হয়।
উপ-প্রকল্পটি ১২ মার্চ ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে প্রকল্পটি সদর দপ্তর থেকে সম্ভব্যতা যাচাই করা হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে উপ প্রকল্পটি (পিআরএ) গ্রাম সমীক্ষা করা হয়। সমীক্ষার পর রামষ্ণপুর, ক্ষেত্রপাড়া ও গাজনা গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ফোকাস মিটিং বা আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সাথে কথা বলে উপ-প্রকল্পটি এলাকাবাসীর জন্য যথাযথ বলে মাতামত প্রদান করেন। অত:পর উপ-প্রকল্পটি ফিজিবিলিটি এ্যন্ড ড্রয়িং ডিজাইন ষ্টাডি করার জন্য একটি ফার্মকে সদর দপ্তর এলজিইডি থেকে প্রেরণ করেন। এই টিম উপ-প্রকল্পটির আইআরআর প্রস্তুত করেন।
এ সবের মূল উদ্দেশ্য ছিলো, উপ-প্রকল্পটিতে যে টাকা বিনিয়োগ করা হবে তার অধিক পরিমাণ বেনিফিড অত্র উপ-প্রকল্প থেকে আসবে। আই আর আর ফিজিবিলিটি পাশ করার পরে প্রকল্পটি প্রকল্পটি ড্রয়িং এ্যন্ড সম্পন্ন করার পরে উপ-প্রকল্পটি বাস্থবায়ন করার জন্য এপ্রাইজাল রিপোর্ট নির্বাহী প্রকৌশরী এলজিইডি দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। রিপোর্টটি ডিষ্ট্রিক লেবেলে ডি এল আই এ পি ই সি কমিটিতে উত্থাপন করা হয়। এ কমিটি এলজিইডিকে উপ-প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করে।
পরে উপ-প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি গঠনের জন্য গত ২০১৫ সালের জুলাই মাসের এক তারিখে সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তার নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি তার উপ-আইন প্রস্তুত করে। উপ আইন এবং প্রথম ব্যবস্থাপনা কমিটি গত ০১-০৯-১৫ তরিখে সাংগঠনিক রূপ লাভ করে। সাংগঠনিক কমিটির ১২ জন সদস্যের মধ্যে নারী সদস্য ছিলেন চার জন।
প্রথম ব্যবস্থাপনা কমিটি উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নে ১২ টি শর্ত পূরণ করে। তার অন্যতম শর্ত ছিলো উপ-প্রকল্প এলাকায় উপকার ভোগীদের কাছ থেকে পরিচালনা ও রক্ষাণাবেক্ষণ ফান্ড উত্তোলন করা। ফান্ডের পরিমাণ ছিলো ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬শ’ ৮৭ টাকা। প্রকল্পের মাটি কাজের জন্য শতকরা তিন ভাগ, ইট বালি সিমেন্টের কাজের জন্য শতকরা এক দশমিক পাঁচ ভাগ। ১২ টি শর্ত পুরন হওয়ার পরে সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্যা ও উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের উপস্থিতিতে ত্রি-পক্ষীয় বাস্তবায়ন চুক্তি সম্পাদিত হয়। পক্ষ তিনটি হলো ইউনিয়ন পরিষদ, পাবসস ও এলজিইডি।
পরে শর্ত মোতাবেক উপ-প্রকল্প এলাকায় উপকার ভোগীদের জন্য ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ৮৩১ টাকা ব্যয়ে ২.৫ কিলোমিটার বেঁড়ি বাঁধ নির্মান, ১৬ লাখ ৬ হাজার ৪৫৫ টাকা ব্যয়ে ১.৩ কিলোমিটার খাল খনন, ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৫১০ টাকা ব্যয়ে ডবিøউ আর এস বা ওয়াটার রিটেনশান এক্সট্রাকসার রেগুলেটর, ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার টকা ব্যয়ে বক্স কালভার্ট, ৫৭ হাজার ৮৩ টাকা ব্যয়ে দুইটি রেফারেন্স লাইন নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়।
Please follow and like us: