কুশখালী সীমান্ত দিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে পার হচ্ছে ভারতীয় গরু:নীরব প্রশাসন
সাতক্ষীরা সদরের কুশখালী সীমান্ত দিয়ে (বিশেষ করে ছয়ঘরিয়া) রাতের আধারে নিয়ে আসা হচ্ছে ভারতীয় গরু। স্থানীয় কিছু চোরাকারবারি বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিয়ে, আবার মাঝে মাঝে বিজিবির কিছু অসাধু সদস্যের সাথে চুক্তি বাংলাদেশী রাখাল ভারতে প্রবেশ করিয়ে দেদারসে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। রাতের আধারে ভারত হতে চোরের মতো গরু নিয়ে আসার কারণে সীমান্ত এলাকার মানুষেরা আতঙ্কগ্রস্ত। এদিকে নিষেধ করা শর্তেও না শোনার কারণে কয়েকদিন আগে ভারত হতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৩টি গরু আটক করে ছেড়ে দেন স্থানীয় চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল।
স্থানীয়রা বলেন, বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিয়ে কুশখালীর রজব আলীর ছেলে বদরু, আব্দুস সামাদের ছেলে ভেলু, খোকন হাজীর ছেলে কুদ্দুস, আব্দুল হামিদের ভাই কবিরসহ হাতে গোনা কয়েকজন চোরাকারবারি রাতের আঁধারে অবৈধ ঘাট মালিক কামরুলসহ কয়েকজনের সহায়তায় বাংলাদেশী রাখাল ভারতের অভ্যন্তরে পাঠিয়ে গরু পার করছে।
কুশখালী ছয়ঘরিয়া এলাকার কৃষক সালাম বলেন, ছয়ঘরিয়া মাঠে আমি ১ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। রাতে ভারত হতে গরু আনার কারণে আমার ধানের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে গরু চোরাকারবারী ভেলু ও কবির বলেন, দুই দিন আগে রাত দশটার দিকে আমাদের তিনটি গরু চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল কলবাজার এলাকা হতে আটকায়। এরপর ১২হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে সভাপতি ইউসুফের উপস্থিতিত চেয়ারম্যান আমাদের গরু তিনটি ছেড়ে দেন। গরুগুলো কিভাবে আসলো এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, রাতে আমরা চুরি করে ভারত হতে গরুগুলো পার করেছিলাম। মাঝে মাঝে আমরা চুরি করে গরু পার করি।
কুশখালি ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল বলেন, কুশখালির দশ/বিশ জন কৃষক আমাকে কিছুদিন আগে বলে যে, রাতে গরু নিয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের ধানের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ওইদিন রাতে গরু নিয়ে যাচ্ছে এমন সংবাদ কয়েকজন কৃষক আমাকে দিলে আমি ইউপি মেম্বর রিপনের সহায়তায় ৩টি গরু আটকে দেয়। এরপর সভাপতি ইউসুফ আলীকে ডেকে নিয়ে আসে ভেলু। তারপর ইউসুফের সাথেই ১২ হাজার টাকার কন্টাকট করে ভেলু। পরে সেই টাকা আমি না দেওয়ার জন্য ভেলুকে বলে দেয়।
তিনি বলেন, আমি বিষয়টি ক্যাম্প কমান্ডারকে বললে তিনি গরু পারাপারের বিষয়টি অস্বীকার করেন। কারণ ক্যাম্প কমান্ডার নিজে উপস্থিত থেকে গরুপ্রতি ৩৫০০ টাকা নিয়ে গরু পার করছেন। ক্যাম্প কমান্ডার যদি নিষেধ করেন একটা পাখিও এপাস ওপাস হবার সাহস রাখে না।
কুশখালি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউসুফ আলী বলেন, চেয়ারম্যান গরু আটকিয়েছে আমি শুনেছি। তবে বিস্তারিত আমি কিছুই জানিনা।
কুশখালী বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নাম প্রকাশ না করে বলেন, লাইট লাগানোর কারণে কুশখালী সীমান্ত দিয়ে কোন কিছু পারাপার করার সুযোগ নেই। তবে তিনটি গরু চেয়ারম্যান আটকিয়েছিলেন বলে আমি শুনেছি।