তালায় আগোলঝাড়ার রাস্তা এখন বেহাল দশা !
জহর হাসান সাগর:
কতৃপক্ষের গাফিলতি ও নজরদারি না থাকায় মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে সাতক্ষীরা তালা উপজেলার এই অঞ্চলের রাস্তাগুলো। বার বার সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় পরে ও নজর পড়ছে না উপর মহলের। উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা পূর্ণ বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের উর্ধ্বগতিতে। তখনি কোন রুপ উন্নয়নের প্রলেপ লক্ষনীয় নয় তালা আগোলঝাড়া হয়ে জাতপুর রোড। অনাদরে বেহাল দশার পড়ে আছে দেখার কেউ নেই।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আগোলঝাড়া কৃষি নির্ভর এলাকা হিসেবে অতি পরিচিত হলেও নেই অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারা। সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই এলাকা। কয়েক যুগ আগে আগোলঝাড়াা গ্রামের কৃতিসন্তান মরহুম বিশ্বাস শাহাদত হোসেন এর নিরাশ প্রচেষ্টায় তালা থেকে আগোলঝাড়া হয়ে তেঁতুলিয়া দিয়ে নোয়াপাড়া একটি পাকা রাস্তা তৈরি হয়। পরবর্তীতে উপজেলার বানিজ্যিক এলাকা জাতপুর কে তালা উপশহরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য কয়েক দফায় আগোলঝাড়া থেকে জাতপুর একটি রাস্তাা তৈরি হয়। রাস্তাটি তৈরির পর থেকে অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে প্রায় শুরু থেকে নেই কোন রুপ সংষ্কারের ব্যাবস্থা। দেখার কেউ নেই হতাশায় ভেঙে পড়েছে এলাকায় সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে রাস্তার এই করুন পরিণতি কারণ খুলনা পাইকগাছায় কয়রা রোড চলছে সংষ্কার, বিকল্প হিসাবে এই রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। রাস্তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের ভারী যানবাহন চলাচল করছে এই রাস্তা দিয়ে। ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে ভীতি।
তালা পল্লীবিদ্যুৎ সাব ষ্টেশনের সামনে কয়েক বছর রাস্তা ভেঙে পড়েছে। একটি মোটরগাড়ি পার হতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া তালা বারুইহাটি থেকে আগোলঝাড়া পর্যন্ত কোন রকম ঝুঁকি নিয়ে চলছে হচ্ছে। আগোলঝাড়া শেখ পাড়ার শুরুর দিকে রাস্তা পুকুরে ভেঙে পড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই রাস্তা দিয়ে সর্বোচ্চ ৫ টনের ওজনের মালবাহী ট্রাক চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও বিশটন ওজনের ভারী যানবাহন চলাচল করছেন এবং তার ফলেই রাস্তায় এই দশা হয়েছে বলে মনে করেন এলাকার সাধারণ মানুষ। ডাঙ্গানলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেও নেই কার্পেটিং গর্ত হয়ে গেছে। ডাঙ্গানলতা থেকে জাতপুর কর্মকার বাড়ী হতে জাতপুর বাজার পর্যন্ত কোন প্রকার চলাচলের মতো অবস্থান নেই, চলতে পারছে না মানুষ চলতে পারছে না মালবাহী ট্রাক ও ভ্যানগাড়ী।
জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যাস্থতম এই রাস্তা দুপাশে একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, এছাড়া আগোলঝাড় দাখিল মাদ্রাসা, তালা মহিলা মাদ্রাসা, তালা আলিয়া মাদ্রাসা, তালা মহিলা ডিগ্রী কলেজ। সারাদিন হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী চলাচলের একমাত্র এই রাস্তা, সময় মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে ব্যাহত হচ্ছে। নানাবিধি শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ের জন্য উপজেলা সদরে যেতে পড়তে হচ্ছে দুর্ঘটনার কবলে।
তালা উপজেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র আগোলঝাড়া ঝুড়িঝাড়া মাঠ এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত নারী-পুরুষ আসেন অলস সময় পার করতে। ছুটির দিনে কর্মজীবীরা পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে আসেন এই বিনোদন কেন্দ্রে। সেখানে পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে।
ভ্যানচালক রিপনের এর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, কি বলবো, কে শুনবে, বলে কি লাভ, অনেক বলেছি আর বলবো না, পারবেন আমার ভ্যানগাড়ি গর্তে পড়ে ব্যাটারী ভেঙেছে কিনে দিতে। এমন আকুতি হাজারো পথচারী ও ব্যবসায়ীদের।
উপজেলার বাণিজ্যিক এলাকা জাতপুর বাজারে সময়মতো পৌঁছাতে ব্যাহত হচ্ছে মালামাল ক্রয় বিক্রয়ে মন্দা পড়েছে। রাজস্ব ভ্যাট দিতে হিমসিম খাচ্ছে জাতপুর বাজারে সমিতি। তালা উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ হালদার রাস্তায় বেহাল দশার কথা স্বীকার করে জানান আসলে এই রাস্তা খুব খারাপ অবস্থা তিনি আরো জানান, তাদের অফিসের পক্ষ থেকে এই রাস্তাগুলো সংষ্কারের জন্য উপর মহলে কাগজ পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
Please follow and like us: