সাতক্ষীরায় ডাকাতির ঘটনার ৫ দিন পার না হতেই একই এলাকায় আবারো ডাকাতি

রঘুনাথ খাঁঃ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার যোগরাজপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম মোস্তফার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনার ৫দিন পার না হতেই একই এলাকায় আবারো ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। বুধবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে সদর উপজেলার লাবসা গ্রামের ব্যবসায়ি কাজী নাসিমুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গৃহকর্তা ও গৃহকর্র্তৃর হাত, পা ও মুখ বেঁধে নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও এক জোড়া কানের দুল লুট করে নিয়ে গেছে।
লাবসা গ্রামের মৃত কাজী আলফাজউদ্দিনের ছেলে খুলনা পোল্ট্রি ফিড এর স্বত্বাধিকারী কাজী নাসিমুল ইসলাম জানান, বুধবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে ৬/৭ জনের একদল ডাকাত তার বাড়ির প্রাচীর টপকে ভিতরে ঢোকে। পরে দক্ষিণ পাশের গ্রীলের দরজার হ্যাজবোল্ট ভেঙে ঘরের দরজার গ্রীল কেটে তার ঘরে ঢুকে পড়ে। এ সময় তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধাক্কা মেরে খাটের উপর ফেলে দিয়ে গামছা দিয়ে হাত ও পা বেঁধে ফেলে ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে তার কাছে আলমারির চাবি চাওয়া হয়। তার স্ত্রী উম্মে মাসুরা আলমারির চাবি দিয়ে দেন। ডাকাত দলের সদস্যরা চাবি খুলে আলমারির ভিতর থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে তার স্ত্রীর কানে থাকা প্রায় আট আনা ওজনের এক জোড়া দুল খুলে নেয়। পরে স্ত্রীর হাত ,পা ও মুখ বেঁধে রেখে চলে যায়। সকালে তিনি থানায় খবর দিলে পুলিশ আসে। তবে তিনি এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে চান না।এ বিষয়ে  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ তুৃহিনুজ্জামান জানান, গত ৯ মে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার যোগরাজপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম মোস্তফার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ বেল্লাল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উত্তর দেবনগর গ্রামের নিজ বাড়ির এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেল্লাল হোসেনের পিতার নাম আকছেদ আলী। তাকে বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমাÐ আবেদন জানানো হয়েছে।
তবে গ্রেপ্তারকৃত বেল্লাল হোসেনের ভাই আবু হানিফ জানান, তার ভাই বেল্লাল হোসেনকে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাইপাস সড়কের মথুরাপুর মোড়ের জয়নুলের চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন রাতে থানায় ও ডিবি কার্যালয়ে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান মেলেনি। এ ব্যাপারে তিনি বুধবার সকালে থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে যেয়ে ভাইকে থানা লকআপে দেখতে পান। পরে তিনি জানতে পারেন যে সোমবার বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আবুল কালাম মোস্তফার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে দুই হাতে হ্যাÐকাপ লাগিয়ে চোখ বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আবুল কালাম মোস্তফার বাড়িতে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সাত দিনের রিমাÐ আবেদন করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার রিমাÐ আবেদনের শুনানী হবে।একইভাবে গ্রেপ্তারকৃত বেল্লাল হোসেন বুধবার বিকেলে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে বাইপাস সড়কের মথুরাপুর মোড়ের পাশে জয়নুলের দোকন থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে মটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তকে ডিবি পুলিশ হেফাজতে নিয়ে দুই হাত পিছনে নিয়ে হ্যাÐকাপ পরিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন করে আবুল কালাম মোস্তফার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক বিন আজিজ এর সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)