খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তারু মিয়াকে হত্যা করেন স্ত্রী-মেয়ে
ডেস্ক নিউজ:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডোবা থেকে ব্যবসায়ী তারু মিয়ার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও মেয়েসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৪ মে) আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী হাদিসা বেগম ও তানজিনা আক্তার।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল এলাকার তারু মিয়ার স্ত্রী হাদিসা বেগম ও তার মেয়ে তানজিদা আক্তার এবং চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাহপুর বড়বাড়ি এলাকার মনা মিয়ার ছেলে সুমন। নিহত তারু মিয়া বড়হাটি এলাকার চিনু মিয়ার ছেলে। তিনি বুধল বাজারে ছোট টং দোকানে পান-সিগারেটের ব্যবসা করতেন।
জানা যায়, তারু মিয়া উশৃঙ্খল চলাফেরা করতো ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল বলে সন্দেহ করতেন তার মেয়ে তানজিনা আক্তার। অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তারু মিয়ার সঙ্গে স্ত্রী হাদিসা বেগমের ঝগড়া লেগে থাকতো। এ নিয়ে তারু মিয়ার স্ত্রী ও মেয়ের মনে ক্ষোভ জন্ম নেই। সেই ক্ষোভ থেকে তারু মিয়ার মেয়ে তানজিনা আক্তার তার বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৪ এপ্রিল রাতে বাবার খাবারের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেন মেয়ে। সেই খাবার খেয়ে তারু মিয়া গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। পরে তারু মিয়ার মেয়ে, আসামি সুমন ও আরো চারজন মিলে রাত দেড়টার দিকে তারু মিয়ার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বাড়ির পাশে ডোবায় লুকিয়ে রাখে মরদেহ।
পরদিন ২৫ এপ্রিল নিহতের মেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়রি) করেন। ২৮ এপ্রিল দুপুরে তারু মিয়ার বাড়ির পাশে ডোবার মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পরে অর্ধগলিত অবস্থায় ডোবা থেকে তারু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র বনিক জানান, এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মহিউদ্দিন শেখ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিহত তারু মিয়ার মেয়ে তানজিদা আক্তারকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে তারু মিয়ার স্ত্রী হাদিসা বেগম ও সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার বিকেলে আসামিরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।