যশোরে নিয়ে সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটার সাবেক স্ত্রীকে হত্যা-আটক স্বামী

ডেস্ক নিউজ:
যশোরে সাবেক স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন খাদিজা খাতুন ওরফে মিতু কর্মকার নামে এক যুবতী। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। পরের বছরই ঘটে বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদের এক বছরের মাথায় যশোরে ডেকে শ্বাসরোধে মিতুকে হত্যা করে সাবেক স্বামী।

মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া গ্রামের বুকভরা বাওড়ের পাশে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এর এক ঘণ্টার মাথায় ঘাতক সাবেক স্বামী মৃন্ময় ভদ্র নিলয়কে আটক করা হয়। আটক নিলয় সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দামোদারকাঠি গ্রামের মদন ভদ্রের ছেলে। বর্তমানে তিনি যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের চান্দুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। মিতু সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার ধানদিয়া চৌরাস্তার আজগর আলী সরদারের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার ভোরে শাড়ি পরা এক নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। এসময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোনও দেখা যায়। পুলিশ, পিবিআই, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যেয়ে নিহতের পরিচয় শণাক্তের চেষ্টা করেন।

ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, বুধবার সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজীব ঘটনাস্থলে যান। মরদেহের পাশে ভেঙে ফেলা মোবাইল ফোন সেটের যন্ত্রাংশ পড়ে ছিলো। ওই ফোন সেটের সূত্র ধরে প্রথমে পরিচয় শণাক্ত করা হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে চান্দুটিয়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে নিলয় নামে ওই যুবককে আটক করা হয়। আটকের পর নিলয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিতু কর্মকারকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

নিলয় ডিবি পুলিশকে আরও জানান, তিন বছর আগে পাটকেলঘাটায় ড্যান্সের একটি অনুষ্ঠানে মিতুর সাথে তার পরিচয় ঘটে। এরপর এক বছরের মাথায় মিতু ধর্মান্তরিত হয়ে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের এক বছর পর মিতু থানায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনার পর তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও নিলয়ের পিছু ছাড়েনি মিতু। বিভিন্ন অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন মিতু। এসব কারণে অতিষ্ঠ হয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মিতুকে মোবাইল ফোন করে যশোরে ডেকে আনেন। এরপর ওইদিন রাত ১১টার দিকে মঠবাড়িয়া গ্রামের বুকভরা বাওড় সংলগ্ন বিকাশের ধানক্ষেতে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর মিতুর মোবাইল ফোনসেট ভেঙ্গে ফেলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজীব বলেন, মিতু মূলত নৃত্যশিল্পী ছিলেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি পছন্দ করতেন না। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছায় মুসলমান থেকে সনাতন ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি মাদকে আসক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাদকের মামলাও রয়েছে।

এসআই রাজীব আরও জানান, বুধবার বিকেলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)