রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর সেহরি-ইফতার যেমন হবে

স্বাস্হ্য ও চিকিৎসা:
সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। আর মাসে সব মুসলিমই রোজা রাখেন। তবে সুস্থদের জন্য রোজা রাখা সহজ হলেও, অসুস্থদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা ডায়াবেটিসের রোগী। রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস অবশ্যই অন্যদের তুলনায় আলাদা হতে হবে।
খাবার যেহেতু শরীরে সরাসরি প্রভাব ফেলে, তাই দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা একদিকে যেমন কমতে পারে, অন্যদিকে হাইপোগ্লুকোমির্য়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।

আর তাই চলুন জেনে নেয়া যাক রোজায় ডায়াবেটিস রোগীরা কী করবেন এবং তাদের ইফতার ও সেহরি কেমন হওয়া জরুরি।

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়

> নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা চেক করুন।

> রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ৩০০ mg/dL হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

> যদি আপনি বিচলিত বা অসুস্থ বোধ করেন তাহলে দ্রুত রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে দেখুন। এই লক্ষণগুলো হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে হতে পারে।

> চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করুন। রোজার সময়ের জন্য চিকিৎসক ওষুধ গ্রহণের সময় পরিবর্তন করে দেবেন।

ইফতারে যেমন খাবার খাবেন

> ইফতারের সময় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, অল্প করে গ্রহণ করুন।

> ইফতারে শরবত দেখে যতই তেষ্টা লাগুক না কেন, একদমই খাবেন না। চিনি সমৃদ্ধ ও ডিপ ফ্রাই করা খাবার গ্রহণ করবেন না।

> অনেক বেশি ও ভারী খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলো পেটফাঁপা ও অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে। হালকা খাবার অল্প করে খান।

> রোজা ভাঙার পর স্বাস্থ্যকর তরল গ্রহণ করুন। পানি সবচেয়ে ভালো পানীয়। এছাড়াও লেবু পানি, ঘোল, মিষ্টি ছাড়া লাচ্ছি পান করতে পারেন। শরবত, ফলের জুস, প্যাকেটজাত মিষ্টি পানীয় গ্রহণ এড়িয়ে চলুন। সুস্থ থাকবেন।

> ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় যেমন-কফি, সোডা বা ফ্রিজি ড্রিংক পান করবেন না। কারণ এই পানীয়গুলো ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে।

> সবার জন্যই সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করা জরুরি। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বিকল্প বেছে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভুল এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাই খাবার নির্বাচনে সতর্ক হোন।

সেহরিতে যেমন খাবার খাবেন

> সেহরিতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

> কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের এবং উচ্চমাত্রার ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। এধরনের খাবার দীর্ঘক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবারগুলো হচ্ছে- বাদামী চাল, গম, ওটস বা বার্লি।

> লিগিউম জাতীয় খাবার যেমন মটরশুঁটি খেতে পারেন, লো ফ্যাটের দুধ ও পনির খেতে পারেন। এছাড়া একটি আস্ত ফল খান। আপনার ডায়েটে ডাল ও সবজি যোগ করুন।

যা খেতে পারেন

সেহরি- ২ টুকরো মাঝারি আকারের গ্রিল/ বেকড/ ষ্টীম চিকেন ও ১ টি রুটি অথবা ১টি আস্ত গমের চিকেন রোল।

ইফতার- ২ টি ডিমের সাদা অংশ ও আস্ত গমের ১টি রুটি অথবা ২টি ওটমিলের প্যানকেক ও ১ গ্লাস দুধ।

রাতের খাবার- ১ বাটি সালাদ, ২টি মাছ ও ১টি রুটি অথবা ১ বাটি মোরগ-পোলাও ও ১ বাটি সবজি।

সূত্র: এনডিটিভি

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)