বাজারে নেই নতুন দামের সয়াবিন তেল, দাম বেড়েছে সবকিছুর
ডেস্ক নিউজ:
রোজার আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। এই সময় প্রায় সবকিছুই কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। রোজার বাজারে নতুন করে বেড়েছে মুরগির দাম। খুচরায় চিনি ও ছোলার দামও বেড়েছে। সবজির দাম সপ্তাহখানেক আগেও কিছুটা কম ছিল, ইফতারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এমন সবজির দাম এখন বাড়তির দিকে। নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেলের এক ও দুই লিটারের বোতল এখনো বাজারে আসেনি। ক্রেতাদের এখনো ক্ষেত্রবিশেষে নির্ধারিত দরের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দরে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কাঁঠাল বাগান, মিরপুর, রামপুরাসহ বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে চিনির দাম নতুন করে কেজিপ্রতি ২ টাকা ও খুচরা বাজারে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। চট্টগ্রামে চিনির গুদামে আগুন লাগার পর দাম নতুন করে বেড়েছে।
এদিকে ছোলা ও কয়েক পদের ডালের দাম কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। ভালো মানের ছোলার দাম নতুন করে কেজিতে ২-৫ টাকা বেড়েছে। আর অ্যাংকর ও খেসারি ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকার মতো। অ্যাংকর ডাল খুচরায় কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ও খেসারির ডাল মানভেদে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন বলেন, আমদানিতে ডলারের খরচ বেশি পড়ায় কয়েক মাস ধরে বাজারে ডালজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে পাইকারি বাজারে নতুন করে ছোলা ও ডালের দাম বাড়েনি। রোজা উপলক্ষে খুচরা বিক্রেতারা এখন কিছুটা বাড়িয়ে নিচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, রোজায় বেশি প্রয়োজন এমন অধিকাংশ পণ্য বেশ চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি কিনতে হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায়। আর ৩২০-৩৪০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে সোনালি মুরগি। কোথাও কোথাও সোনালি মুরগির দাম ৩৫০ টাকাও চাওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়তে শুরু করে। তখনই মনে হয়েছিল, রমজানের আগে মুরগির দাম বাড়বে। গতবারও রোজার আগে মুরগির দাম বেড়েছিল।
এদিকে বাজারে নতুন দামের সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল এলেও এখনো ১ ও ২ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে অনেক খুচরা ব্যবসায়ী নির্ধারিত দর লিটারে ১৬৩ টাকার চেয়ে বেশি রাখছেন।
নিত্যপণ্যের মধ্যে চাল ও আটার বাজারে বড় পরিবর্তন নেই। এবার রোজার বাজারে খেজুরের দাম বেশ চড়া। বিভিন্ন পদের মাছ, গরু ও খাসির মাংসের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। আমদানির খবরে কিছুটা কমেছে শুধু পেঁয়াজের দাম। ১২০ টাকা কেজির দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার আশপাশে।
সবজির দামও বাড়তির দিকে। বিশেষ করে ইফতারি তৈরিতে প্রয়োজন হয়, এমন সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে তালিকার প্রথম দিকে আছে বেগুন। গত সপ্তাহের ৬০–৭০ টাকা কেজির বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০–৮০ টাকায়। আলুর দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকার মতো বেড়ে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের দাম ১০০ টাকার নিচে থাকলেও এ সপ্তাহে তা শতক ছাড়িয়েছে।
দাম লাফিয়ে বাড়ছে লেবুরও। আকারভেদে হালিপ্রতি লেবুর দাম উঠেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা।
আজমিনা আফরিন নামে এক ক্রেতা বলেন, গরুর মাংসের দাম মাসখানেক ধরে আবার বেড়েছে। এজন্য মানুষ মুরগির মাংসের দিকে ঝুঁকছিল। সামনে রোজা, ঠিক এখনই মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজার খরচ আরেক দফা বেড়ে যাবে। এখনই শক্ত হাতে বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।