ঢাবিতে দাড়ি ছিঁড়ে ফেলা ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

ডেস্ক নিউজ:
ক্যান্টিনে খাওয়ার পর পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিককে মারধর করে দাড়ি ছিঁড়ে ফেলা ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত হোসেন অভিকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার ঢাকা বশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ বহিষ্কারাদেশ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠনের শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আরাফাত হোসেন অভি (সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) কে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সূর্যসেন হলের ক্যান্টিনে খাওয়ার পর ক্যান্টিন মালিক মো. ফাহিম হোসাইন (৩৫) এদিনের খাবার বিলসহ পূর্বের বকেয়া বিল (২৬৫০ টাকা) চাইলে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং এ ছাত্রলীগ নেতা তার (ক্যান্টিন মালিক) এবং ক্যান্টিন ম্যানেজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় ক্যান্টিন মালিকের মুখ থেকে এক মুষ্টি দাঁড়ি ও পরনের শার্ট-গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর ভুক্তভোগী ফাহিম হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তা আমলে নিয়ে তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ফাহিম উল্লেখ করেন, আজ (সোমবার) দুপুরে ক্যান্টিন চলাবস্থায় আমি ক্যাশে বসা ছিলাম। এমন সময় মো. আরাফাত হোসেন অভি এসে আমার কাছে খাবার চায়, আমি খাবার দিলাম এবং আগের বাকি ২৬৫০ টাকা তার কাছে চাওয়াতে তিনি আমার উপরে উত্ত্যক্ত হয়ে অতর্কিত হামলা করে বসে। এ সময়ে তিনি আমার গায়ে হাত তুলে এবং আমাকেসহ আমার ম্যানেজারকে দুই দফা মারধর করে। এ সময়ে তিনি আমার দাড়ি, শার্ট, লুঙ্গি, গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। আমি নিরুপায় হয়ে ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে যাই এবং হলের ছাত্রদের কাছে আশ্রয় নেই।

উল্লেখ্য, এর আগে তিনবার তার কাছ হতে টাকা চাওয়াতে তিনি আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়।

অভিযোগের বিষয়ে আরাফাত হোসাইন অভি ঘটনার দিন বলেছিলেন, আমি দুপুরে খাবার খেতে গেলে ক্যান্টিন মালিক বকেয়া টাকা চাইলে আমি বললাম আমার বিকাশে সমস্যা টাকা তুলতে পারছি না। আমি প্রমাণও দেখাইলাম। পরে আমি সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ম্যানেজারকে বললেন আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেয়। এটা শুনে আমি ক্যান্টিন মালিককে বললাম আপনি এটা কেমন কথা বললেন, সমস্যা তো থাকতে পারে। এরপর হঠাৎ করে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন, আমিও তার কলার টেনে ধরি। তারপর ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার দাঁড়িতে আমার হাত লেগে ছিঁড়ে যায়। তিনি আমাকে প্রথম ধাক্কা দেয়। আমি কোনো মারধর করিনি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)