সাতক্ষীরায় সাংবাদিক রমজান আলী হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় কারাগারে থাকা নাহিদের জামিন না মঞ্জুর

আসাদুজ্জামান:

ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ও বকচরা আহমেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার রমজান আলীসহ চার জনকে কুপিয়ে ও ছুরকাঘাত করার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা প্রচেষ্ঠা মামলার প্রধান আসামী কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কারাগারে থাকা হত্যা প্রচেষ্টা ও চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামী নাহিদ জামিন আবেদন জানালে আদালতের বিচারক চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজী তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।

জামিন না মঞ্জুরকৃত আসামী কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ নাহিদ (২৬) শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দীনের পুত্র।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত বছরের ২৩ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ ও রিপনসহ তাদের গুন্ডাবাহিনী হাতে রাম দা, লোহার রড, ছুরি, লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ নিয়ে বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে শহরের বাঁকালস্থ রমজান আলীর বাড়িতে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এতে রমজান প্রতিবাদ করলে ৪নং আসামী আব্দুল গফফারের হুকুমে নাহিদ, রিপন, সিরাজুলসহ অন্যান্য আসামীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে বোন সাজিদা খাতুন, ভাগ্নে ফাহিম সরদার ও রমজানের ছেলে ফারহান ফেরদৌস তাকে রক্ষা করতে গেলে উক্ত আসামীরা তাদেরও মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে ১ নং আসামী নাহিদ হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সজোরে রমজানের পেটের বাম পাশে পাজরের নিচে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এরপর ২নং আসামী রিপন হত্যার উদ্দেশ্যে জিআই পাইপ দিয়ে বোন সাজিদাকে মারতে গেলে তার বাম চোখে লেগে থ্যাতলানোসহ রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং আসামী সিরাজুল হত্যার করার উদ্দেশ্যে ভাইপো ফারহানকে রামদা দিয়ে তার পিঠের বাম পাশে কোপ মারে। এতে সে গুরুতর জখম হয়। আসামী আব্দুল গফফার হত্যার উদ্দেশ্যে ভাগ্নে ফাহিমকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারতে গেলে সে মাথা সরিয়ে নিয়ে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় রমজান ছাড়াও তার বোন সাজিদা, ভাইপো ফারহান ও ভাগ্নে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। আহতরা সবাই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ঘটনায় রমজানের মেঝ ভাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে নাহিদ, রিপন, সিরাজুল গফফারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরদিন সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় কারাগারে থাকা প্রধান আসামী কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ জামিনের আবেদন জানালে আদালতের বিচারক তা না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও শহরের ইটাগাছা এলাকার আবুল হোসেনের পুত্র মুজাহিদুর রহমান অন্তুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে বাম হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে নেয়া ও একই এলাকার আব্দুস সবুরের মালিকানাধীন আলম এন্টার প্রাইজের ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এ মামলায় রাস্ট্র পক্ষের আইজীবি ছিলেন, জজ কোর্টের পিপি এড. আব্দুল লতিফ। তাকে সহায়তা করেন এড. এবিএম সেলিম। এছাড়া আসামী পক্ষে ছিলেন, এড. আব্দুল মজিদ, এড. মামুনুুর রশিদসহ প্রমুখ।
জজ কোর্টের পিপি এড. আব্দুল লতিফ উক্ত আসামীর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।#

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)