ভোট চুরির কলঙ্ক মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া বিদায় নিয়েছিল-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ডেস্ক নিউজ:
ভোট চুরির কলঙ্ক মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করে বিদায় নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া নির্বাচন করে। সেই নির্বাচনে ভোট চুরি করে। আর এই ভোট চুরির অপরাধে আন্দোলন হয়, সংগ্রাম হয়, জনগণ প্রতিবাদ করে। সেই প্রতিবাদের ফলে ঠিক ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়। ভোট চুরির কলঙ্ক মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করে বিদায় নিয়েছিল। এরপরে যে নির্বাচন হয় আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে মাদারীপুরের কালকিনিতে সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ১৯৯৬ সালের জুনে সরকার গঠন করি। ২০০১ সালের জুলাইতে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করি। এরই মধ্যে খাদ্য ঘাটতি ৪০ লাখ মেট্রিক টন পূরণ করে ২৬ মেট্রিক টন খাদ্য গোলায় মজুত রেখে যাই। বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬০০ মেগাওয়াট থেকে ৪৩০০ মেগাওয়াটে বৃদ্ধি করি। স্বাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ থেকে ৬৫.৫ ভাগে উন্নীত করি। কমিউনিটি ক্লিনিক করে জনগণের দোরগড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেই, বিনামূল্যে ওষুধ দিতে শুরু করি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে আদর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বধীন করেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা-আদর্শ তাকে হত্যার পর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল এবং হত্যা, ক্যু ষড়যন্ত্রের যে রাজনীতি শুরু হয়েছিল, তার ফলেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য বিড়ম্বনা শুরু হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়াউর রহমান। শুধু ক্ষমতা দখলই করেনি এই দেশ কে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। যেখানে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এই দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ মার্কিন ডলার। মাত্র তিন বছর সাত মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেই মাথাপিছু আয় ২৭৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর পরে জিয়া-এরশাদ যারাই ক্ষমতায় এসেছে, এদেশের মানুষের আয় কিন্তু বাড়েনি, তারা বাড়াতে পারেনি। তারা রাষ্ট্রীয় সমস্ত অর্থ-সম্পদ দিয়ে কিছু লোককে ধনী শ্রেণিতে তৈরি করে, একটা এলিট গোষ্ঠী তৈরি করে তাদের মাধ্যমে জনগণের ভোট চুরি করা, সেই হ্যাঁ না ভোট। একদিকে সেনাপ্রধান আরেকদিকে রাষ্ট্রপতির দুই পদ বেআইনিভাবে, সংবিধানবিরোধীভাবে দখল করে একটা নির্বাচনের প্রহশন করে জনগণের ভোট কেড়ে নেয় এবং তারই পকেট থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তৈরি হয় ওই বিএনপি সংগঠন। আর যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে আনে। তাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করে।

এর আগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়কপথে মাদারীপুরের কালকিনিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেল সাড়ে ৩টায় কালকিনির সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ মাঠে জনসভাস্থলে তিনি প্রবেশ করেন। এ সময় শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাও ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই জনসভাস্থল স্লোগানে মুখর করে তোলেন নেতাকর্মীরা। প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুকন্যার কালকিনিতে আগমন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা যায়। জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ মাঠে আসতে থাকেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)