তালায় কুমড়োর বড়ি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন গ্রামের নারীরা
জহর হাসান সাগর:
দেখতে যেমন সুন্দর, খেতে তার চেয়ে বেশি সুস্বাদু। খুব সহজেই গ্রামের নারীরা তৈরি করে থাকেন। প্রায় প্রতিটি সবজি বা মাছ রান্নায় দিলে বেড়ে যায় স্বাদ। বলছি কুমড়ো বড়ির কথা। পৌষের শুরুতেই জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। এরই মধ্যে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার গ্রামাঞ্চলের নারীরা। কুমড়ো বড়ি তৈরি ও তা বাজারে বিক্রি করে স্বাবলম্বীও হয়ে উঠছে অনেক পরিবার।
সাত-সকালে তালা উপজেলার আটারই, বারইহাটী, হাজরাকাটী মহান্দী সহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে বেশ ব্যস্ত গ্রামীণ নারীরা। অনেকেই এই কুমড়ো বড়ি তৈরি করছেন বাজারে বিক্রির জন্য। আবার অনেকের বাজারের কুমড়ো বড়ি পছন্দ নয়, তাই বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে বাড়তি স্বাদ যুক্ত করতে নিজ হাতে তৈরি করছেন কুমড়ো বড়ি এবং তা বছরজুড়েই খাবেন তারা।
বিশেষ এই খাবারটি তৈরিতে ব্যস্ত কয়েক নারী জানান, ‘আগের দিনে মেয়েরা ডাল শিল-পাটায় বেটে রাতভর গুঁড়া করে তা সারাদিন রোদে শুকানোর পর কুমড়ো বড়ি তৈরি করত। এখন আর রাতভর শিল-পাটায় ডাল গুঁড়া করতে হয় না। ডাল গুঁড়া করার মেশিনের সাহায্যে ঘণ্টার মধ্যেই অনেক ডাল গুঁড়া করে বড়ি তৈরি করা যায়। তবে পরিশ্রম তারপরও একেবারে কমেনি।’
তালা উপজেলার আটারই এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘এই বড়ি সারা বছর তৈরি করা গেলেও এটা শীতকালে বেশি তৈরি হয় এবং শীত মৌসুমের তৈরি বড়িই বেশি সুস্বাদু হয়।’
জানা গেল এই বড়ি তৈরি করতে উপকরণ লাগে দুটি। মাসকলাইয়ের ডাল আর বড় চাল কুমড়া। মহিলারা জানান, বড়ি রোদে শুকিয়ে নেওয়ার জন্য বড় চাটাই বা পাটি এবং পাতলা সুতি কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে রাখতে হয়।
এ কাজে অভিজ্ঞরা জানান, পৌষ-মাঘ মাসে নতুন ডাল ও গাছপাকা চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি ভালো হয়। গরমের সময় কিংবা চাল কুমড়া পুরোনো হলে কিংবা গাছপাকা বাত্তি না হলে বড়ি টক হয় এবং ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া সে বড়িগুলো বেশিদিন রাখাও সম্ভব হয় না।