শ্যামনগরে পিঠা উৎসব 

শ্যামনগর প্রতিনিধি:

ভাপা, চিতই, নকশি, পুলি, পাকান, মালাই, মালপোয়াসহ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা পিঠা-পুলির সমাহারে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে প্রাণের উচ্ছ্বাসে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল পিঠা উৎসব।

মঙ্গলবার শ্যামনগরের ৯১নং খ্যাগড়াদানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে স্থানীয় নারী-পুরুষ, যুব, কচি-কাচাদের পদচারণায়। মেতে ওঠেন পিঠা-পুলিতে, আনন্দ-উল্লাসে।

পাটি সাপটা, বুনচি, অমাই লিটা, গোলাপ, সাহেব, নারিকেল, মোয়া (সুরির), বাতাসা, বিয়ে হরণ, পানতোয়া, দুধ চিতই, আন্দশা, কুলশি, কলা পিঠা, ক্ষীরপুলি, ঝিনুক পিঠা, ফুলঝুরি পিঠাসহ অন্তত ৩৫ প্রকার সুস্বাদু পিঠা নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক আয়োজিত এই উৎসবে অংশ নেন তারা।

সেই সাথে চলে শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গানে-নৃত্যে-পিঠা-পুলিতে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে সবাই।

উৎসবে অংশ নিয়ে খ্যাগড়াদানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা আক্তার বলেন, শীত মৌসুমকে ঘিরে বাঙালি জাতির নানা সংস্কৃতি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম নবান্ন উৎসব, পিঠা-পুলিতে মেতে থাকা। শীত এলেই পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যায় পাড়ায় পাড়ায়। কিন্তু যান্ত্রিকতার এই যুগে মানুষ নবান্ন উৎসব ভুলতে বসেছে। এই উৎসবে অংশ নিয়ে সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেল।

কোস্টাল ইয়ুথ নেটওয়ার্ক এর সভাপতি রাইসুল ইসলাম পিঠা উৎসব আয়োজন প্রসঙ্গে বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মের পরিচয় ঘটিয়ে দিয়ে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পিঠা শুধু একটি খাবার নয়, এটি রন্ধন শিল্প, ঐতিহ্য এবং আনন্দের সংমিশ্রণ।

বারসিকে আ লিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার বলেন, নাগরিক জীবনে যান্ত্রিকতায় যেমন সবকিছু আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। তেমনি সীমিত হয়ে পড়ছে মানবিক বোধ। মানবিক বোধ জাগ্রত করতে গ্রামীণ সংস্কৃতির বিকল্প নেই। এর মধ্যে অন্যতম নবান্ন উৎসব, যা আমাদের শেকড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)