বুধহাটায় শহীদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেনের স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটায় প্রথম শহীদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেনের স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।  বুধবার সকাল ১০ টায় শহীদ আনোয়ার হোসেনের জন্মস্থান বুধহাটায় এ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন উদ্বোধন করা হয়। বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ও সাতক্ষীরা জেলা আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফফার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, একেএম  রইস উদ্দিন প্রমুখ। সাতক্ষীরা জেলা আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আশাশুনি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক  এসকে হাসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধন কালে বক্তব্য রাখেন বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ডাবলু, প্রথম আলো নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি,  বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জুলু, ডাঃ সাহিনুর আলম সাহিন, বুধহাটা সবুজ সংঘের সভাপতি রেজওয়ান আলী,যুগ্ন সম্পাদক আহসান হাবীব,  ইউপি সদস্য ফিরোজ হোসেন,যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী প্রমুখ।
 এ সময় বক্তারা বলেন,  শহীদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৩০ সালে নানার বাড়ি বুধহাটা গ্রামে আনোয়ার হোসেন জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল কনুই গাজী ও মায়ের নাম পরীজান বিবি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ছিল সবার বড়। মেধাবী আনোয়ার হোসেন বাড়ি সংলগ্ন বুধহাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। এর পর বুধহাটা বি.বি.এম কলেজিয়েট বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার একপর্যায়ে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৪৬ সালে এসএসসি পাস করেন।
পরে খুলনার বিএল কলেজে পড়াশুনাকালীন ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। তরুণ আনোয়ার হোসেন ভাষা আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুলনার তৎকালিন গান্ধী পার্কে (বর্তমানে হাদিস পার্ক) ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ইস্তেহার পাঠ করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েকদিন পর তিনি মুক্তি পান। পরে ভাষা আন্দোলনের মিছিল থেকে ১৯৪৯ সালে পুলিশ তাকে আবারও গ্রেপ্তার করে প্রথমে তাকে কোতয়ালী থানায় রাখা হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী কারাগারে।
সেখানে পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন তিনি। একপর্যায়ে ১৯৫০ সালে ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে খাপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালানো হয়। তাতে সাতজন কারাবন্দি নিহত হন। তার মধ্যে ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন ছিলেন অন্যতম।
তাই আমরা বিশ্বাস করি মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলনে ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন দেশের প্রথম শহীদ। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে তার কোন স্বীকৃতি নেই। তাই আমাদের দাবি শহীদ আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষা সৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান।
বক্তারা আরো বলেন ৭৪ বছর পর আজকে এই স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনের মাধ্যমে আনোয়ার হোসেনের স্মৃতি সংরক্ষণের শুভ সূচনা করা হলো। ভবিষ্যতে আন্দোলনের মাধ্যমে অন্যান্য দাবি পূরণ হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যর্থ করেন। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের আর্থিক সহযোগিতা করেন সাতক্ষীরা ৩ আসনের  সংসদ অধ্যাপক ডাঃ আফম রুহুল হক এমপি।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)