সাতক্ষীরায় জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে নাগরিক সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে
প্রাণনসায়র খাল পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপন ও নাগরিক সমাবেশ

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও জলাবয়ু পরিবর্তেনে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের কপ-২৭ সম্মেলনে ৮০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা পর্যায়ক্রমে কয়লা নির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থা হতে বেরিয়ে আসবে। এর আগে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে চাইলেও অর্থনৈতিক ও ব্যাবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় বহু দেশের বিরোধিতায় সে সকল উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়নি। বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর বিরোধীতার ফলে ওই সকল পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।

এমতাবস্থায়  জলবায়ু ন্যায্যতার জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী ‘গ্লোবাল ডে অব অ্যাকশন এন্ড ফুসিল ফুয়েলস ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। যার অংশ হিসেবে ১৫ সেপ্টেম্বও ২০২৩ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের রাধানগর প্রাণসায়র খালপাড়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপন, পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও নাগরিক সমাবেশের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ওয়াটারকিপারস-বাংলাদেশ, ব্রতী, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, স্বদেশ, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, জেলা কমিটি আয়োজিত এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা।

জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এ্যাড. আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সুব্রত ঘোষ, সুন্দরবন ও উপকুল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের দুলাল দেবনাথ, যুবলীগ নেতা প্রদীপ দত্ত, সাংবাদিক জাকির হোসেন, জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল, উন্নয়ন গবেষক আসিফ ইকবাল, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জ্যোস্না দত্ত, উন্নয়নকর্মী সরদার গিয়াস উদ্দীন আহম্মেদ, মহুয়া মঞ্জুরী, শেখ আফজাল হোসেন, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সভাপতি এ্যাড. মুনিরদ্দীন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোসফিকুর রহমান মিল্টন, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ, মহিলা ঐক্য পরিষদের রূপা বসু, সঙ্গীতা দাস, জেলা নাগরিক যুব কমিটির আহবায়ক সালাউদ্দীন রানা প্রমুখ। এছাড়াও জনপ্রতিনিধি, পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।

নাগরিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ি দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নতুন গ্যাসক্ষেত্র  তৈরির ঘোষণা, এশিয়ার এলএনজি বাজারে আধিপত্য জোরদারে জাপানের আগ্রাসী কার্যক্রম, চীন ও জাপান কর্তৃক নৌবহরের সক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এ সকল কিছুই জলাবয়ু পরিবর্তনরোধে তাদের চরম উদাসিনতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা-সম্মেলনেবৃহৎ শক্তির দেশগুলো বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতা দিলেও আদতে তারা জলবায়ু পরিবর্তনকে নিজেদেও নেতৃত্ব জাহির করার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনকে অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর মতো করে বিবেচনায় নিয়ে এর ক্ষতিকর প্রভাব হতে নিজেদেরকে সুরক্ষিত ও এর মোকাবেলাই গঠিত বিভিন বৈশ্বিক ফোরাম ও সম্মেলনে জলবায়ু কূটনীতিতেও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করাই  যেন বিশ্বের অর্থনৈতিক  ও সামরিক শক্তিসম্পন্ন দেশগুলো প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে।

তাই আমাদের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যাবহার শুরু করতে হবে। সর্বস্তরে কয়লা জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। গ্যাস ও এলএনজি জলবায়ু ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় কোন সমাধান নয়, বরং সবুজায়ন-নবায়নযোগ্য জ্বালানিই ভবিষ্যৎ। গ্যাস ও এলএনজিতে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে। দ্রুত ও পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)