দেবহাটায় জামায়াত ক্যাডার ও জঙ্গী ‘আফগান জিয়া’ গ্রেপ্তার

দেবহাটা প্রতিনিধি:

২০১৩ সালে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ হত্যা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িঘর ভাংচুর, নাশকতাসহ অন্তত ২০ মামলার আসামী আফগানিস্থানে প্রশিক্ষণ নেয়া জঙ্গী দুর্ধর্ষ জামায়াত ক্যাডার জিয়াউর রহমান ওরফে আফগান জিয়া (৪০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তিনি দেবহাটা উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের নারিকেলি গ্রামের আব্দুল করিম সরদারের ছেলে। সোমবার (২৮ আগষ্ট) দুপুরে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দেবহাটা থানা পুলিশ।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, সখীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করে কিশোর বয়সেই বড়ভাই জাহাঙ্গীরের সাথে সৌদিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন জিয়া। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় সেখানে থাকতে না পেরে আফগানিস্থানে চলে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন তালেবানি জঙ্গী সংগঠনের সাথে।

জঙ্গী প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে পারুলিয়াতে বড় ভাইয়ের হার্ডওয়ার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। এসময় স্থানীয় এক বিএনপি নেতার হাত জাতীয়তাবাদি দলের রাজনীতিতে পা রাখেন। পরে ধর্মান্ধ জামায়াত নেতাদের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১০ সালে প্রথম পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হলে আফগান জিয়ার জঙ্গী সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সেসময় আফগান জিয়ার জঙ্গী সম্পৃক্ততার বিষয়টি মিডিয়ায় স্বাক্ষাতকারে তুলে ধরেন তৎকালীন পুলিশ সুপার মনির-উজ-জামান।
পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। অস্ত্রচালনায় সিদ্ধহস্ত প্রশিক্ষিত জঙ্গী আফগান জিয়া সহিংসতাকালীন সময়ে সখীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী ছিলেন।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়কে ঘিরে দেবহাটাসহ সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, হত্যা, গাড়ি ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ, রাস্তাঘাট ও গাছ কেটে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করাসহ বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সীমাহীন নাশকতা কর্মকান্ডের নের্তৃত্বে ছিলেন আফগান জিয়া। পরে জঙ্গীবাদ ও নাশকতারোধে পুলিশের অভিযান শুরু হলে আফগান জিয়া পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আত্মগোপন করেন।

দেবহাটা থানার ওসি বাবুল আক্তার বলেন, সম্প্রতি আত্মগোপনে থেকে আবারও নাশকতার ছক কসছিল আফগান জিয়া। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে কিছুদিন ধরে পুলিশ তাকে ট্রাকিংয়ে রেখেছিল। সোমবার দুপুরে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার পরবর্তী বিচারার্থে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)