শ্যামনগরের রাজাকার কমান্ডার আজিজ ও সুরত মেম্বর গ্রেপ্তার

রঘুনাথ খাঁ:

আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত দুই রাজাকারকে গ্রেপ্তার করেছে
কাউন্টার টেরিজম ইউনিটের পুলিশ সদস্যরা।

সোমবার সকালে তাদেরকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের তারানীপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার তারাণীপুর গ্রামের শের আলী গাজীর ছেলে রাজাকার কমান্ডার আব্দুল আজিজ গাজী (৮৪) ও
একই গ্রামের পুটে গাজীর ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য সুরত আলী গাজী (৭৪)।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিনগর গ্রামের আশিষ কুমার মন্ডল ও ইসরাফিল গাজী জানান, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তারানীপুর
গ্রামের রাজাকার কমান্ডার আব্দুল আজিজ গাজী ও সরত আলী মেম্বরের নেতৃত্বে কালিঞ্চি, হরিনগর, ধুমঘাট ও নকীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে শরনার্থী ও মাক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে গুলি করে
হত্যা করা হয়। তাদের বাড়িঘর লুটপাট করে ভেঙে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ২৭ অক্টোবর ভেটখালি- জয়াখালি খেয়াঘাটে আজিজ ও সুরত আলীর নেতৃত্বে ১০ জনেরও বেশি
শরনার্থীকে ধরে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা হয়।

তারা আরো জানান, ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে কালিনগর গ্রামের বামাচরণ মন্ডলের ছেলে সুরেন্দ্রনাথ মন্ডলসহ কয়েকজন হিন্দুকে ধরে
নিয়ে ধুমঘাট এলাকায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় সুরেন্দ্রনাথ মন্ডলের মেয়ে টুকু রানী মন্ডল বাদি হয়ে ১৯৯৬ সালে সাতক্ষীরা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন আব্দুল আজিজ ও সুরত
আলীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ওই দুই আসামী দীর্ঘদিন জেলে থেকে মহামান্য হাইকোর্টে থেকে জামিনে মুক্তি পান। মামলাটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ৪/২২ নং মামলা
হিসেবে বিচার শুরু হয়।

এ মামলায় আব্দুল আজিজ ও সুরত আলী পলাতক ছিলেন। সোমবার সকালে ঢাকার কাউন্টার টেরিজম সেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানিজ ফতেমা ও পুলিশ পরিদর্শক কবীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে
যায়।

এ ব্যাপারে টুকু রানী মন্ডলের সঙ্গে তার ০১৭১২-৯৯৬০৪৩ নং মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, আন্তজার্তিক আপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪/২২ নং মামলার পলাতক আসামী হিসেবে আব্দুল আজিজ ও সুরত আলীকে সোমবার
সকালে কাউন্টার টেরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারে কানিজ ফতেমার নেতৃত্বে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদেরকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)